এক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দুই প্রধান শিক্ষক। প্রতিষ্ঠানটি এসএসসির পরীক্ষা কেন্দ্র হওয়ায় অবশেষে কেন্দ্র সচিবের দায়িত্ব পেলেন উপজেলা সহকারি শিক্ষা অফিসার। মঙ্গলবার (২৫ এপ্রির) বিকালে উপজেলা নিবার্হী অফিসার (চলতি দায়িত্ব) সচিবের দায়িত্ব প্রদান করেছেন।
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্র ধর্মপুর ডিডিএম উচ্চ বিদ্যালয়ের সচিবের দায়িত্ব পালন নিয়ে চলছিল নানা জল্পনা কল্পনা, আইনি ও স্নায়ুযুদ্ধ। এদিকে বুধবার (২৬ এপ্রিল) পর্যন্ত ওই বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থীরা প্রবেশপত্র পায়নি মর্মে অভিযোগ উঠেছে।
দীর্ঘ প্রায় দশ ধরে ওই বিদ্যালয়ে দুইজন প্রধান শিক্ষক প্রতিষ্ঠান প্রধান হিসেবে দাবি করে আসছেন। এনিয়ে আদালতে ডজন খানেক মামলা রয়েছে। পাশাপাশি অভিযোগও রয়েছে অর্ধশতাধিক। শিক্ষা মন্ত্রনালয়, শিক্ষা অধিদপ্তর, শিক্ষাবোর্ড একনামে ধর্মপুর ডিডিএিম উচ্চ বিদ্যালয়েকে জানে বা চিনে। কিন্তু অত্যন্ত মজার বিষয় আজ কোন সমাধান হয়নি।
সে কারণে বিদ্যালয়টি চলছে নিজের ইচ্ছায়। প্রতিষ্ঠান প্রধান দাবিদার দুইজন হচ্ছেন শিরিন মোছাঃ শামসাদ বেগম ও শরিফুল ইসলাম।
২০২২ সালের এসএসসি পরীক্ষায় সচিবে দায়িত্ব পালন করেছেন বিদ্যালয়ের সহকারি প্রধান শিক্ষক জালাল উদ্দিন। আসন্ন এসএসসি পরীক্ষায় সচিবের এবং কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে উপজেলা সহকারি শিক্ষা অফিসার আব্দুর রহমানকে।
ওই বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থীর অভিভাবক মশিউর রহমান মিঠু জানান, এখন পর্যন্ত তার ছেলে প্রবেশ পত্র পায়নি। কে প্রবেশ পত্র বিতরণ করবেন তাও জানা যায়নি। এনিয়ে তিনি উৎকষ্ঠায় রয়েছেন অভিভাবকগণ।
দাবিদার প্রধান শিক্ষক শরিফুল ইসলাম জানান, তিনি বৈধ প্রধান শিক্ষক। আদালতের রায় তার পক্ষে রয়েছে, এবং শিক্ষাবোর্ড ইতিমধ্যে তাকে এডহক কমিটি প্রদান করেছে। তিনি দুই মাসের শিক্ষক কর্মচারির বিল দিয়েছেন। মামলা নিয়ে পাল্টাপাল্টি আদেশ থাকায় সে পুরোপুরি দায়িত্ব পালন করতে পারছেন না।
অপর দাবিদার প্রতিষ্ঠান প্রধান শিরিন মোছাঃ শামসাদ বেগম জানান, তিনি প্রকৃতপক্ষে বৈধ প্রধান শিক্ষক। তিনি দীর্ঘদিন হতে প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব পালন করে আসছেন। আদালতের আশেদ তার পক্ষে রয়েছে। গত এক সপ্তাহ আগে শরিফুল ইসলামের কমিটি বাতিল করে শিক্ষাবোর্ড পুনরায় তাকে এডহক কমিটি প্রদান করেছে এবং তিনি দুইমাস হতে শিক্ষক কর্মচারিগণের বেতন ভাতা প্রদান করছেন। প্রশাসন অন্যায়ভাবে তাকে কেন্দ্র সচিবের দায়িত্ব হতে বিরত রাখছেন।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুল মমিন মন্ডল জানান, মামলা সংক্রান্ত জটিলতার কারণে ওই প্রতিষ্ঠান প্রধানের পদটি নিয়ে স্নায়ুযুদ্ধ চলছে। কেন্দ্র সচিবের বিষয়টি উপজেলা প্রশাসন নির্ধারণ করবেন।
উপজেলা নিবার্হী অফিসার (চলতি দায়িত্ব) মো. মাসুদুর রহমান জানান, ওই প্রতিষ্ঠান প্রধানের পদ নিয়ে আদালতে একাধিক মামলা রয়েছে। সে কারণে সচিবের দায়িত্ব নিয়ে জটিলতা রয়েছে। তবে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য উপজেলার সহকারি শিক্ষা অফিসারকে দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে।
যূথী/দীপ্ত সংবাদ