নিজ দলেই সংখ্যালঘু হয়ে পড়ছেন রাজনীতিবিদরা। জাতীয় সংসদে ক্রমেই বাড়ছে ব্যবসায়ীদের সংখ্যা। বেসরকারি পরিসংখ্যানে দেখা যায়, গত ৫০ বছরে সংসদে ব্যবসায়ীদের প্রতিনিধিত্ব বেড়েছে শতকরা ৪৫ ভাগ।
বিষয়টি নিয়ে নাখোশ খোদ রাজনীতিরা। তারা বলছেন, এ কারণে জনস্বার্থের চেয়ে প্রায়ই ব্যক্তি স্বার্থ বড় হয়ে ওঠে।
দেশের বহুল আকাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা সংগ্রামে নেতৃত্ব দেন বঙ্গবন্ধুসহ বহু রাজনীতিবিদ। তাদের নেতৃত্বেই একাত্তরে একটি রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মধ্যদিয়ে দেশ স্বাধীনতা পায়। কিন্তু এই স্বাধীনতা অর্জনের ৫০ বছরের মধ্যে রাজনীতির অগ্রভাগে চলে এসেছেন ব্যবসায়ীরা।
রাজনৈতিক দলগুলোর বর্তমান অবস্থা বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, প্রায় সব দলেই সংখ্যাগরিষ্ঠ নেতা এখন ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। ফলে, ক্ষমতার রাজনীতিতে অর্থবিত্তের মালিক ব্যবসায়ীদের দাপটে প্রকৃত রাজনীতিবিদেরা কোণঠাসা হয়ে পড়ছেন।
আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রহমান বলেন, এই রাজনৈতিক অবক্ষয়ের পেছনের কারন হলো ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর হত্যাকান্ড এবং সেই হত্যাকান্ডের ভেতর দিয়ে যে রাজনৈতিক উত্থান।
বিএনপি ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু মতে, বর্তমানে যাদের ব্যবসায়ী বলা হচ্ছে তাদের বেশিরভাগই ভূমিদস্যু ও ব্যাংক লুটপাটকারী।
বিভিন্ন তথ্যউপাত্ত বিশ্লেষণে দেখা যায়, স্বাধীনতার পর ১৯৭৩ সালে এমপিদের মধ্যে ব্যবসায়ীর যে হার ১৫ শতাংশ ছিল, তা এখন অতীতের সব রেকর্ড পেছনে ফেলে দিয়েছে।
সামরিক নেতৃত্বাধীন সরকারের সময় ব্যবসায়ী, সম্পদশালী ও প্রভাবশালীদের মনোনয়ন দিয়ে সংসদ সদস্য করা হয়েছে। মাত্র ৬ বছরে ১৯৭৯ সালে ব্যবসায়ীর সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৩৫ শতাংশ। গণতান্ত্রিক পদ্ধতি পুনঃপ্রবর্তনের পরও সেই একই ধারা দেখা যায়। এতে বেড়েছে দুর্বৃত্তায়ন।
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ব্যবসায়ীদের রাজনীতি করার বিষয়টি শুধু বাংলাদেশে নয়, সারা দুনিয়াতেই পরিবর্তনটা হয়েছে।
প্লেটো তার রিপাবলিক গ্রন্থে আদর্শ রাষ্ট্রের যে চিত্র তুলে ধরেন, সেখানে ব্যবসায়ীদের রাজনীতি করার অধিকার রাখেননি। কারণ তিনি জানতেন, ব্যবসায়ীরা যেখানে হাত দেন সেখান থেকেই তারা টাকা উপার্জন করার কথা ভাবেন।
এসএ/দিপ্ত নিউজ