জুলাই হত্যাযজ্ঞের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ট্রাইব্যুনালে দ্বিতীয় দিনের সাক্ষ্যে শেখ হাসিনাসহ দায়ীদের কঠোর শাস্তি দাবি করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে দুই সদস্যর বেঞ্চে দ্বিতীয় দিনের মতো সাক্ষ্য দেন তিনি।
এ সময় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের নির্দেশে আন্দোলনকারী ছাত্র সমন্বয়কদের তুলে নিয়ে ডিবি অফিসে নির্যাতন ও জিজ্ঞাসাবাদের বর্ণনাও দেন নাহিদ ইসলাম। এরপর তার সাক্ষ্য শেষে জেরা শুরু হয়।
ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দানকালে নাহিদ ইসলাম বলেন, আন্দোলনকারী নেতাদের গ্রেপ্তার করে চাপ দেয়ার পাশাপাশি তাদের জীবিত ফেরত চাইলে আন্দোলন প্রত্যাহারের হুমকি দেয়া হয়। এই অবস্থার মধ্যেই ২০২৪ সালের ১৬ জুলাই থেকে হত্যাযজ্ঞের প্রকৃত তথ্য প্রকাশ ও আন্দোলনকারীদের কর্মসূচি তুলে ধরা থেকে বিরত থাকে গণমাধ্যম।
ডিবি অফিসে তুলে নিয়ে সমন্বয়কদের নির্যাতন ও জিজ্ঞেসাবাদের বিষয়ে উল্লেখ করে নাহিদ ইসলাম জানান, ২০ জুলাই রাতে চোখ বেঁধে, হাতকড়া পরিয়ে তাকে তুলে নিয়ে যায় ডিবি। পরে তাকে জানানো হয়– তাকে গুম করা হয়েছে, আন্দোলন প্রত্যাহার না করলে ছাড়া হবে না। তবে ২৪ ঘণ্টা পর তাকে ছেড়ে দেয়া হয়। এরপর ২৬ জুলাই আন্দোলন প্রত্যাহার করতে জোরপূর্বক লিখিত বক্তব্য পাঠ করিয়ে মোবাইলে ধারণ করে মিডিয়ায় প্রচার করেন তৎকালীন ডিবি প্রধান হারুন–অর–রশীদ।
ট্রাইব্যুনালকে নাহিদ ইসলাম আরও জানান, ডিবি অফিস থেকে ছাড়া পেয়ে ২০২৪ সালের ১ আগস্ট এক দফা দারিতে সরকার পতনের ডাক দেয় সমন্বয়করা। এরপর ৪ আগস্ট রাতেই সরকার গঠনের জন্য ড. ইউনূসকে উপদেষ্টা করার বিষয়ে আলোচনা করেন তারা।
শেখ হাসিনার মামলায় নাহিদ ইসলাম প্রসিকিউশনের শেষ সাক্ষী। এরপর নিয়ম অনুযায়ী সাক্ষ্য দেবেন এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। তারপর যুক্তি–তর্ক উত্থাপিত হবে। সবমিলিয়ে এখন পর্যন্ত আলোচিত এ মামলায় ৪৭ জনের জবানবন্দি নেয়া হয়েছে।