প্রথিতযশা শিল্পী ও ভাস্কর হামিদুজ্জামান খান মারা গেছেন। রবিবার (২০ জুলাই) সকাল ১০টা ৭ মিনিটে রাজধানীর ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮০ বছর।
শিল্পকলায় বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে হামিদুজ্জামান খান ২০০৬ সালে একুশে পদক লাভ করেন। ২০২২ সালে বাংলা একাডেমি ফেলো নির্বাচিত হন। প্রখ্যাত এই শিল্পীর একক প্রদর্শনী হয়েছে ৪৭টি।
হামিদুজ্জামান খানের সহধর্মিণী ও চিত্রশিল্পী আইভি জামান জানান, গত ১৭ জুলাই তিনি নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। পরে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে আইসিইউতে নেয়া হয়। সেখান থেকে লাইফ সাপোর্টে নেয়ার পর আজ সকালে তিনি মারা যান।
হামিদুজ্জামান খান ১৯৪৬ সালের ১৬ মার্চ কিশোরগঞ্জের সহশ্রাম গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬৭ সালে বাংলাদেশ কলেজ অব আর্টস অ্যান্ড ক্রাফটস (বর্তমান চারুকলা অনুষদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়) থেকে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি ১৯৭০ সালে চারুকলায় শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন।
হামিদুজ্জামান খানের স্মারক ভাস্কর্যগুলো তাকে বাঙালির হৃদয়ে চিরদিন অমর করে রাখবে। আশুগঞ্জ সার কারখানায় ‘জাগ্রত বাংলা’, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘সংশপ্তক’ এবং ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে ‘বিজয় কেতন’ তার বিখ্যাত কাজগুলোর মধ্যে অন্যতম।
ভাস্কর্যের পাশাপাশি তিনি জলরং, তেলরং, অ্যাক্রিলিক এবং স্কেচ মাধ্যমে সমান দক্ষতার সঙ্গে কাজ করেছেন। মুক্তিযুদ্ধের পর তার ভাস্কর্যে পাখির বিষয়টি ছিল অত্যন্ত প্রিয়। ঢাকার বুকে ব্রোঞ্জ ও ইস্পাতের তৈরি বেশ কিছু পাখির ভাস্কর্য শিল্প জগতে তার স্বাতন্ত্র্যের সাক্ষ্য বহন করে।
তার অন্যান্য উল্লেখযোগ্য শিল্পকর্মের মধ্যে রয়েছে মতিঝিলে বাংলাদেশ ব্যাংকে ‘ইউনিটি’, বাংলাদেশ কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে ‘ফ্রিডম’, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘স্বাধীনতা চিরন্তন’ এবং পাবলিক সার্ভিস কমিশনে ‘মৃত্যুঞ্জয়ী’।