রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে ভারত ও চীন কেন প্রত্যাশিত উপায়ে এগিয়ে আসছে না তার ব্যাখ্যা দিয়েছেন পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। এর সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, শুধু বাংলাদেশ নয়, এই অঞ্চল এবং এর বাইরেও একটি সম্ভাব্য হুমকি রয়েছে।
তিনি বলেন,’আলোচনার প্রক্রিয়ার শেষে কোনো ফলাফল নেই এবং আমি মনে করি না যে এটি (রোহিঙ্গা ইস্যু) খুব দ্রুত এবং সহজে সমাধান হতে যাচ্ছে।‘
তিনি বলেন, প্রতিটি দেশেরই নিজস্ব স্বার্থ রয়েছে এবং বাংলাদেশ পরিস্থিতির শিকার হয়েছে।
শনিবার (১৬ নভেম্বর) ঢাকার একটি হোটেলে বে অব বেঙ্গল কনভারসেশনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে উদ্বোধনী বক্তব্য দেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
বাংলাদেশ বর্তমানে কক্সবাজার ও ভাসানচরে ১৩ লাখের বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিচ্ছে।
ভারত ও চীনের ভূমিকা নিয়ে কথা বলতে গিয়ে হোসেন বলেন, তিনি কাউকে দোষ দিচ্ছেন না, কারণ সবাই নিজের স্বার্থ দেখে।
উপদেষ্টা বলেন, কিন্তু এতে রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের স্বার্থ এবং যার কারণে বিষয়টি দীর্ঘায়িত হয়েছে এবং প্রক্রিয়ার শেষে কোনো ফলাফল নেই বলে মনে হয় না।
তিনি বলেন, এই সমস্যার সমাধান না হলে এটি বাকি বিশ্বের জন্য একটি সমস্যা হয়ে দাঁড়াবে।
হোসেন বলেন, রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে বাংলাদেশ তার প্রধান প্রতিবেশী দেশগুলোর কাছ থেকে প্রত্যাশিত মাত্রায় সমর্থন পায়নি।
তিনি বলেন, ‘গত আট বছরে আমরা প্রতিবেশী ও বড় প্রতিবেশীদের কাছ থেকে যে পরিমাণ সহায়তা আশা করেছিলাম তা পাইনি।’
হোসেন বলেন, প্রশ্ন আসে, চীন কেন এই সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশের পাশে থেকে এগিয়ে আসছে না?
কারণ, বঙ্গোপসাগরে চীনের প্রবেশাধিকারের জন্য মিয়ানমার খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
উপদেষ্টা বলেন, একইভাবে ভারত মনে করে কালাদান প্রকল্প গুরুত্বপূর্ণ এবং এই প্রকল্পের জন্য মিয়ানমারের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখতে হবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ প্রতিযোগিতামূলক ভূ–রাজনৈতিক স্বার্থের আবর্তে আটকা পড়েছে।
রোহিঙ্গা তরুণদের ভবিষ্যৎ নিয়ে ক্রমবর্ধমান উদ্বেগ প্রসঙ্গে হোসেন বলেন, তরুণ প্রজন্ম, যাদের ভবিষ্যতের কোনো আশা নেই, তারা অলস বসে বসে অন্যরা কী করছে তা দেখার সুযোগ নেই।
তিনি বলেন, ‘একটা সময় আসবে যখন এটা শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়, আমাদের প্রতিবেশী ও দূরের মানুষের জন্যও মারাত্মক সমস্যা হয়ে দাঁড়াবে।’
উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশ ছাড়াও বঙ্গোপসাগরে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পক্ষ রয়েছে– যুক্তরাষ্ট্র, ভারত ও চীন।
আল/ দীপ্ত