রাজশাহীতে বোরো ধানের জমিতে সেচের পানি না পেয়ে মুকুল সরেন নামের এক সাঁওতাল কৃষক বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন। রবিবার (৯ এপ্রিল) দুপুরে গোদাগাড়ী উপজেলায় এ ঘটনা ঘটে।
মুকুল সরেন গোদাগাড়ী উপজেলার দেওপাড়া ইউনিয়নের বর্ষাপাড়া গ্রামের গোপাল সরেন ছেলে। এ ঘটনায় জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।
জানা যায়, বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) গভীর নলকূপের আওতায় জমি চাষ করতেন মুকুল। মুকুল এবার সাড়ে ৩ বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছেন। নিজের জমিতে সেচের জন্য গভীর নলকূপের পানি না পেয়ে মুকুল সরেন রবিবার দুপুরে বিষপান করে অসুস্থ অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি হয়।
বর্তমানে তিনি হাসপাতালের ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছে এবং আশঙ্কামুক্ত আছেন। গত এক সপ্তাহ থেকে জমিতে সেচের পানির জন্য ঘুরে ঘুরে না পেয়ে মনের দুঃখে বিষ পান করেছেন বলে জানালেন তার স্বজনরা।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মুকুল সরেন জানান, সেচের পানির জন্য তিনি এক সপ্তাহ ধরে গভীর নলকূপে ঘুরছেন। কিন্তু নলকূপ অপারেটর হাসেম আলী বাবু তাকে পানি দিচ্ছিলেন না। এ জন্যই তিনি বিষ পান করেছেন।
এদিকে গতকাল রাতেই খবর পেয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান রাজশাহীর জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ। বর্তমানে মুকুল সরেন শঙ্কামুক্ত এবং তার সকল চিকিৎসার ব্যয় বহন করবে জেলা প্রশাসক। আর এ ঘটনায় তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, এর আগে রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার নিমঘটু গ্রামের দুই সাঁওতাল কৃষক অভিনাথ মারান্ডি ও তাঁর চাচাতো ভাই রবি মারান্ডি বোরো ধানের জমিতে সেচের পানি না পেয়ে গত বছরের মার্চে বিষপান করেছিলেন। এতে দুজনেরই মৃত্যু হয়।
গতবছর এ উপজেলায় পানি না পেয়ে বিষপান করে দুই কৃষক আত্মহত্যা করলে সারাদেশে তোলপাড় শুরু হয়। পরে পরিবারের পক্ষ থেকে তৎকালীন গভীর নলকূপ অপারেটর সাখাওয়াত হোসেনের বিরুদ্ধে আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলা করা হয়।
আফ/দীপ্ত সংবাদ