সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন ইস্যুত বারবার আলোচিত–সমোলোচিত হয়েছেন হবিগঞ্জ ৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।
সর্বশেষ ছাত্র–জনতার গণআন্দোলনের বিরুদ্ধে তার ভূমিকা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেয়। ছাত্র–জনতার আন্দোলনের জেরে শেখ হাসিনার পদত্যাগ–দেশত্যাগের পর গা ঢাকা দেন সরকার দলীয় এমপি–মন্ত্রী–নেতাকর্মী। গা ঢাকা দিয়েছিলেন ব্যারিস্টার সুমনও। এরপর থেকে কোথাও দেখা যায়নি তাঁকে, সোশ্যাল মিডিয়াতেও ছিলেন নীরব।
এর মধ্যেই সোমবার (১৯ আগস্ট) রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক ভিডিও বার্তা পোস্ট করেন ব্যারিস্টার সুমন। ২ মিনিট ২৭ সেকেন্ডের ভিডিওতে আত্মপক্ষ্য সমর্থন করেন তিনি।
ব্যারিস্টার সুমন বলেন, ‘আমি শুরু থেকে ছাত্রদের কোটা সংস্কার আন্দোলন বা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে কোটা সংস্কারের পক্ষে ছিলাম এবং এই আন্দোলনে যারা আহত–নিহত হয়েছেন, এই হত্যাকাণ্ডের বিচারের পক্ষেও আমি ছিলাম। কিন্তু আমার ব্যর্থতা হলো, আমি আপনাদের বোঝাতে পারিনি। আমি এই ব্যর্থতার জন্য আমার যারা ফলোয়ার আছেন, আমার কাছে যারা প্রত্যাশা করেছেন সবার কাছে কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছি।
তিনি বলেন, ‘আপনারা এখন যে কাঠামোগত সংস্কার চাচ্ছেন, অথচ এই সংস্কারের জন্য দীর্ঘ বছর আগে থেকে কাজ করে যাচ্ছি আমি। দুর্নীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ, গত ১৫ বছরে যে দুই–তিনজন মানুষ দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন, তাদের মধ্যে হয়তো আমাকে একজন পাবেন। আমি এস আলমের বিরুদ্ধে বাদী হয়ে টাকা পাচারের জন্য মামলা করেছি। আওয়ামী লীগের বর্তমান কমিটির যিনি প্রচার সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, আমেরিকাতে তার ৯টি বাড়ি থাকা নিয়ে আমি নিজে বাদী হয়ে মামলা করেছি। পুলিশের সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে নিজে বাদী হয়ে দুদকে মামলা করেছি। জাতীয় সংসদে তার বিরুদ্ধে আমি বক্তব্য দিয়েছি। কর কমিশনার মতিউরের বিরুদ্ধে মামলা করেছি, সালাম মুর্শেদীর বাড়ি নিয়ে মামলা করেছি, ফুটবলের দুর্নীতি নিয়ে কাজী সালাউদ্দিন সম্পর্কে কথা বলেছি। অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে আমি নিজে মামলা করেছি, পরে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে তার ৮ বছরের সাজা হয়েছে।’
ব্যারিস্টার সুমন আরও বলেন, ‘আপনারা জানেন, আমার জীবনে কত ঝুঁকি ছিল। কোটা আন্দোলন শুরু হওয়ার দুই সপ্তাহ আগে সংবাদ সম্মেলন করে বলতে বাধ্য হয়েছি, জিডি করেছি যে আমার জীবনের ঝুঁকি রয়েছে। সুতরাং এই যুদ্ধে সবসময় আমি চেষ্টা করেছি। এখন আপনারা যে যুদ্ধ শুরু করেছেন, ছাত্র–জনতার নেতৃত্বে যে যুদ্ধ, দুর্নীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ, এই যুদ্ধে সবসময় আমি দোয়া করি। এই যুদ্ধে সবসময় আমার জায়গা থেকে শরিক থাকার চেষ্টা করব।’
উল্লেখ্য, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে হবিগঞ্জ–৪ (চুনারুঘাট–মাধবপুর) আসনে নির্বাচিত হন ব্যারিস্টার সুমন।
এসএ/দীপ্ত সংবাদ