কাশ্মিরের পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার জেরে সামরিক সংঘাতে জড়িয়েছে ভারত ও পাকিস্তান। দুদেশের মধ্যে চলমান প্রাণঘাতী সংঘর্ষে পরিস্থিতিতে বিশ্বব্যাপী উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে।
বুধবার ( ৭ মে ) বিভিন্ন দেশ ভারত ও পাকিস্তান দুদেশকে শান্ত থাকার এবং উত্তেজনা কমানোর আহ্বান জানিয়েছে।
নিচে এ ঘটনায় বিশ্ব নেতাদের প্রতিক্রিয়ার সারসংক্ষেপ তুলে ধরা হলো:
চীন বলেছে: ‘সবার আগে শান্তি’
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘ভারত ও পাকিস্তান যেন শান্তি ও স্থিতিশীলতাকে অগ্রাধিকার দেয়। উসকানিমূলক কাজ থেকে বিরত থাকে।’
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন: ‘দ্রুত শেষ হোক’
তিনি বলেন, ‘ঘটনাটি শুনে খারাপ লাগছে। আশা করি এটি খুব দ্রুত শেষ হবে।’
যুক্তরাষ্ট্রের বার্তা: ‘উত্তেজনা কমাতে আলোচনা হোক’।
যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের মুখপাত্র ব্রায়ান হিউজ বলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ভারত ও পাকিস্তানের নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছেন। তিনি উভয়পক্ষকে আলোচনার মাধ্যমে উত্তেজনা কমাতে উৎসাহিত করছেন।
জাতিসংঘের আহ্বান: ‘সর্বোচ্চ সংযম দেখান’।
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের মুখপাত্র ডুজেরিক বলেন, ‘সীমান্তে ভারতের সামরিক অভিযানে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মহাসচিব। তিনি উভয় দেশকে সর্বোচ্চ সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্ব আরেকটি সামরিক সংঘর্ষ সহ্য করতে পারবে না।’
ইউরোপীয় ইউনিয়ন: ‘সংযম ও শান্তিপূর্ণ সমাধান প্রয়োজন’।
ইইউ মুখপাত্র আনোয়ার এল আনুনি বলেন, ‘আমরা দুই দেশকেই সংযত থাকার এবং দ্রুত উত্তেজনা হ্রাসের পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানাই।’
তিনি বলেন, ‘দীর্ঘমেয়াদি শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য আলোচনার বিকল্প নেই।’
ফ্রান্স: ‘সতর্কতা জরুরি’।
ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাঁ–নোয়েল ব্যারোট বলেন, ‘সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের অবস্থান আমরা বুঝি। তবে দুই দেশকে আমরা সংযত থাকতে বলছি যাতে পরিস্থিতির আরও অবনতি না ঘটে এবং বেসামরিক মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়।’
জার্মানি: ‘গভীর উদ্বেগ’।
ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁর সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে নবনির্বাচিত জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিশ মের্ৎস বলেন, ‘দুই পারমাণবিক শক্তির মধ্যে এমন সংঘর্ষ গভীর উদ্বেগের বিষয়।’
যুক্তরাজ্য: ‘ব্রিটেনজুড়ে উদ্বেগ’।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার সংসদে বলেন, ‘ভারত–পাকিস্তানের উত্তেজনা ব্রিটেনের অনেক নাগরিককে উদ্বিগ্ন করছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা দুই দেশের সঙ্গে এবং আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সঙ্গে যোগাযোগ করছি। সংলাপ, উত্তেজনা কমানো ও বেসামরিক সুরক্ষা নিশ্চিত করতে কাজ করছি।’
রাশিয়া: ‘অবনতির আগেই থামুন’।
রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘আমরা সামরিক উত্তেজনার দ্রুত বৃদ্ধিতে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।’
তারা উভয় দেশকে সতর্ক থাকতে এবং কূটনৈতিক উপায়ে সমস্যার সমাধান করতে বলেছে।
তুরস্ক: ‘পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধের ঝুঁকি’।
তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘ভারতের হামলা পূর্ণমাত্রার যুদ্ধ ডেকে আনতে পারে।’
তারা আরও বলেছে, ‘আমরা বেসামরিক জনগণ ও অবকাঠামো লক্ষ্য করে চালানো হামলা এবং উসকানিমূলক পদক্ষেপের নিন্দা জানাই।’
আফগানিস্তান: ‘সংলাপ ও কূটনীতির মাধ্যমে সমাধান চান’।
আফগান তালেবান সরকার বলেছে, ‘উত্তেজনা বাড়ানোটা এই অঞ্চলের স্বার্থের পরিপন্থী।’
তারা দুই দেশকে সংযত থাকার ও সংলাপ ও কূটনীতির মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের আহ্বান জানিয়েছে।
ইএ/এজে/দীপ্ত সংবাদ