চিকিৎসার জন্য ভারতে গিয়ে ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ারুল আজিম আনার। গত তিন দিন ধরে পরিবারের সঙ্গে যোগযোগ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন তার। এতে উদ্বিগ্নে রয়েছে পরিবারের সদস্যরা ও নেতাকর্মীরা। এ ঘটনায় গত ১৮ মে ভারতের বরাহনগর থানায় মিসিং ডায়েরি করেছেন এমপি আনারের বন্ধু শ্রী গোপাল বিশ্বাস।
দীপ্ত নিউজের পাঠকদের জন্য মিসিং ডায়েরিতে যা লেখা হুবহু তুলে ধরা হলো– জিডিতে গোপাল বিশ্বাস উল্লেখ করেছেন– গত ১২ ১৭/৩ মন্ডলপাড়া লেন, কলি–৯০ আনুমানিক সন্ধ্যা ৭টার দিকে আমার বাড়িতে বাংলাদেশের এমপি আনোয়ারুল আজীম আনার, পিতা ইয়াকুব আলী বিশ্বাস, সরকারি ভূষণ স্কুল রোড, কালীগঞ্জ, ঝিনাইদহ ডাক্তার দেখানোর উদ্দেশ্যে আসেন। (উল্লেখ্য, ওনার সঙ্গে আমাদের ২০–২৫ বৎসর এর পারিবারিক সম্পর্ক।)
পরের দিন দুপুর ১.৪১ মিনিটে ডাক্তার দেখানোর উদ্দেশ্যে আমার বাড়ি থেকে রওনা হয়ে যান। যাবার সময় বলে যান আমি দুপুুরে খাব না। সন্ধ্যেবেলা ফিরে আসবো এবং যাবার সময় নিজে গাড়ি ডেকে বিধান পার্ক কলকাতা পুলিশ স্কুলের সামনে থেকে গাড়িতে উঠে চলে যান, যাবার সময় গাড়িতে উঠতে শুভজীত মান্না দেখে। তারপর উনি সন্ধ্যে বেলা না ফিরে হোয়াটসঅ্যাপ এ ম্যাসেজ করে জানায় আমি বিশেষ কাজে দিল্লিতে চলে যাচ্ছি এবং পৌঁছে ফোন করব, তোমাদের ফোন করার দরকার নেই।
গত ১৫ মে সকাল ১১:২১ মিনিটে হোয়াটসঅ্যাপ মাসেজ করে জানায় আমি দিল্লি পৌঁছালাম, আমার সাথে ভিআইপিরা আছে। ফোন করার দরকার নেই, এই একই ম্যাসেজ নিজের বাড়িতে এবং পিএ (এমপির ব্যাক্তিগত সহকারী) কে ফরোয়ার্ড করে।
গত ১৬ মে সকাল বেলা ওনার পিএ কে ফোন করে। কিন্তু পিএ ফোন রিসিভ করতে পারেনি, পরে যখন রিং ব্যাক করে তখন আর ওনার ফোন এ কোন যোগাযোগ করা সম্ভব যায়নি।
গত ১৭ মে ওনার মেয়ে আমাকে ফোন ফোন করে জানায় আংকেল আমার বাবার সাথে কোন যোগাযোগ করতে পারছি না। তারপর থেকে আমি ওনার যাবতীয় পরিচিতদের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করি এবং সবাই তারপর থেকে ওনাকে (এমপি) ফোন করে কিন্তু কোন যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
১৮ বাধ্য হয়ে বরাহনগর থানায় আসিয়া মিসিং ডায়েরি নেওয়ার জন্য অনুরোধ করছি।
পিএস আব্দুর রউফ জানান, গত ১২ মে সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার চিকিৎসার জন্য ভারতে যান। কিন্তু এরপর বৃহস্পতিবারে শেষ কথা হয়েছে। ৪ দিন পার হলেও পরিবারের সদস্যরা তার সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করতে পারেননি। এমপি স্যারের খোঁজ পেতে তারা ডিবি কার্যালয়েও গিয়েছেন।
একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, গত ১২ মে দর্শনার বর্ডার দিয়ে ভারতে প্রবেশ করেন এমপি আনার। ইমিগ্রেশন শেষ করে ভ্যানে চড়ে ভারতের অভ্যন্তরে প্রবেশ করেন তিনি। এমনই একটি ভিডিও সামাজাকি যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করেন তার গাড়ি চালক তরিকুল ইসলাম। এ সময় এমপি আনার সাদা শার্ট পরিহিত ছিলেন। ভ্যান চালক আর এমপি আনার ছাড়া ভ্যানে আর কেউ ছিলেন। পেছনে একটি ব্যাগও ছিল।