ভোটার আকৃষ্ট করতে প্রতিশ্রুতি দিয়ে যাচ্ছেন বরিশাল সিটি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধি প্রধান মেয়র প্রার্থীরা। সকল সমস্যা মোকাবেলা করে নগরবাসীকে সাথে নিয়ে ব্যাপক উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী আবুল খায়ের খোকন সেরনিয়াবাত।
৫২ বছরে যেসব উন্নয়ন হয়নি সেসব বিষয়ে অগ্রাধিকার দেয়ার প্রতিশ্রতি দিচ্ছেন ইসলামী আন্দোলন প্রার্থী মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম। অপরদিকে রোদ–বৃস্টি ঝড়ে সব সময় জনগনের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন সাবেক মেয়র পুত্র স্বতন্ত্র প্রার্থী কামরুল আহসান রূপন। অপরদিকে বরিশালের পরিবর্তনে ইকবাল হোসেন তাপসের মতো একজন সৃজনশীল মানুষকে মেয়র নির্বাচিত করার আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির নেতারা।
বৃহস্পতিবার (১ জুন) সকালে নগরীর নবগ্রাম রোডের দুই পাশে ১৫ ও ২১ নম্বর ওয়ার্ডের বিভিন্ন এলাকায় গনসংযোগ করেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী আবুল খায়ের খোকন সেরনিয়াবাত। এ সময় নতুন বরিশাল বিনির্মান এবং প্রধানমন্ত্রীর পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ১২ জুন নৌকায় ভোট দেয়ার আহ্বান জানান তিনি।
গনসংযোগের প্রাক্কালে আওয়ামী লীগ প্রার্থী সাংবাদিকদের বলেন, নির্বাচিত হতে পাড়লে সাংবাদিকরা যদি সহযোগিতা করে ইনশাআল্লাহ বরিশালের ব্যাপক উন্নয়ন হবে। নানা সমস্যা থাকবে, সেগুলো মোকাবেলা করেই এগিয়ে যেতে হবে। নির্বাচিত হতে পাড়লে আমি মানুষের সেবা দিতে পারব এটা আমার দৃঢ় বশ্বাস। এখানের সর্বস্থরের জনগন আমার সঙ্গে আছেন। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে কোন সংশয় নেই দাবি করে তিনি বলেন, মানুষের যেভাবে সারা পাচ্ছি তাতে নৌকার বিজয় সু–নিশ্চিত।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ প্রার্থী মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম আজ সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত নগরীর জিলা স্কুল মোড় থেকে সদর রোড পর্যন্ত গনসংযোগ করেন। মানুষের নৈতিক উন্নয়নের পাশাপাশি বস্তিগুলোতে স্বাস্থ্য সেবা ও শিক্ষার আলো ছড়াতে ১২ জুন হাতপাখায় ভোট চান তিনি। পরে সাংবাদিকদের মুফতি ফয়জুল বলেন, বরিশাল নগরীতে গত ৫২ বছরে যে সব দিকে উন্নয়নের ছোয়া পড়েনি, নির্বাচিত হতে পাড়লে সেগুলোকে অগ্রাধিকার দেবেন। খালগুলো সংস্কার করবেন। যেখানে খালের প্রয়োজন নেই সেগুলো ড্রেনেজ করে রাস্তায় পরিনত করবেন। যানজট নিরসনে রাস্তাঘাট সম্প্রসারন ও বিকল্প রাস্তা নির্মান এবং প্রয়োজন অনুযায়ী ওভার ব্রীজ নির্মান করবেন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন করবেন। বস্তিগুলোয় অবকাঠামো উন্নয়ন এবং শিক্ষার আলো ছড়াবেন। সবাই মিলে মিশে যাতে এই শহরের উন্নয়ন করা যায় সে জন্য সাংবাদিকদের সহযোগিতা চান তিনি।
এদিকে বিএনপি’র প্রয়াত সাবেক মেয়র আহসান হাবিব কামালের ছেলে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী কামরুল আহসান রূপন আজ সকালে নগরীর নতুন বাজার এলাকাং গনসংযোগ করেন।
এ সময় কামরুল আহসান রূপন সাংবাদিকদের বলেন, এই শহরে রাস্তাঘাটের উন্নয়ন, জলাবদ্ধতা নিরসন ও মশক নিধন প্রয়োজন। তারচেয়ে জনগনের বড় চাওয়া নির্বাচিত মেয়রকে সব সময় পাশে পাওয়া। আমার বাবাবে জনগন যেভাবে সব সময় পাশে পেয়েছে আমি নির্বাচিত হতে পাড়লে রোদ–বৃস্টি–ঝড় সব সময় জনগনের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি।
টানা দুই দিন ধরে ঢাকায় অবস্থান করছেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী ইকবাল হোসেন তাপস। তবে তার পক্ষে আজও সকালে নগরীর চরকাউয়া ফেরীঘাট, সিটি মার্কেট, ভাটারখাল ও বরফকল বস্তি সহ বান্দ রোডে গনসংযোগ করেন জাতীয় পার্টির নেতারা। তাপসের সহধর্মীনি ইসমতআরা টুপুর বিকেলে গনসংযোগ করেন নগরীর ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের চহঠা এলাকায়।
গনসংযোগকালে মহানগর জাতীয় পার্টির আহবায়ক ও লাঙ্গল প্রার্থীর প্রধান নির্বাচন সমন্বয়কারী অধ্যাপক মহসিন–উল ইসলাম হাবুল বলেন, বরিশালে একটা পরিবর্তন জরুরী। বরিশাল সিটিতে একজন ভালো মেয়র দরকার। জাপা প্রার্থী ইকবাল হোসেন তাপস একজন উচ্চ শিক্ষিত এবং সৃজনশীল মানুষ। বরিশালের পরিবর্তন তাকে দিয়েই সম্ভব। জনগনকে ভোট কেন্দ্রে যেতে উৎসাহ প্রদানের পাশাপাশি ১২ জুন লাঙ্গলে ভোট দেয়ার আহ্বান জানান তারা।
বিসিসি নির্বাচনে ৭ মেয়র প্রতিদ্বন্ধির মধ্যে জাকের পার্টিল মিজানুর রহমান বাচ্চু সিমীত প্রচারনা শুরু করেছেন। আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী আলী হোসেন হাওলাদারের কিছু পোস্টার দেখা গেলেও তার প্রচারনা দৃশ্যমান নয়। অন্য এক স্বতন্ত্র প্রার্থীর তৎপরা দেখা যাচ্ছে না। ১২ জুন বরিশাল সিটির ১২৬ কেন্দ্রে ভোট হবে ইভিএম মেশিনে। এবার সিটি নির্বাচনে মোট ভোটার ২ লাখ ৭৬ হাজার ২৯৮ জন।
আল/দীপ্ত সংবাদ