ফেনীতে বিএনপি–জামায়াত নেতা–কর্মীদের বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা বেড়েই চলেছে। ঘন্টার হিসেবে গড়ে প্রতি ৩৮ ঘন্টায় প্রায় একটি করে মামলা দায়ের হয়েছে। এ নিয়ে ২৮ অক্টোবরের পর থেকে ০৬ ডিসেম্বর বুধবার রাত পর্যন্ত ৪০ দিনে বিএনপি–জামায়াতের নেতা–কর্মীদের বিরুদ্ধে ফেনীর বিভিন্ন থানায় ২৫টি নাশকতার মামলা হয়েছে। এর মধ্যে ১৯টি মামলার বাদী হয়েছে পুলিশ। পাঁচটি মামলার বাদী হয়েছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীরা, একটি মামলার বাদী একজন ট্রাক মালিক।
পুলিশ সূত্র জানায়, এ সময়ে জেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ১৭৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতা–কর্মী ১৭১ জন এবং জামায়াত–শিবিরের ৮ জন কর্মী রয়েছেন।
সর্বশেষ ০৪ ডিসেম্বর সোমবার রাতে নাশকতা ও বিস্ফোরকদ্রব্য আইনে ফেনী মডেল থানায় দুটি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে একটি মামলার বাদী মডেল থানার এসআই মো. আলমগীর হোসেন। এই মামলায় বিএনপির ছয় নেতা–কর্মী ও অজ্ঞাত সাত–আটজনকে আসামি করা হয়েছে।
আরেকটি মামলার বাদী ফেনী শহর পুলিশ ফাঁড়ির এসআই প্রতুল দাস। এ দুটি পৃথক মামলায় পুলিশ যুবদল নেতা মো. ইকবাল হোসেন ও ছাত্রদল নেতা মো. সালমান ফারসীকে গ্রেপ্তার করেছে। তাঁদের কাছ থেকে গাড়ির টায়ার, পেট্রল বোমা, লোহার অ্যাঙ্গেলসহ নাশকতার জিনিসপত্র পাওয়া যায় বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: বিভিন্ন স্থানে পুলিশের সাথে বিএনপি-জামায়াতকর্মীদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া
ফেনী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম চৌধুরী জানান, বিএনপির নেতা–কর্মীরা অবরোধের নামে সোমবার সকালে ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়কের মহিপাল এলাকায় এবং ফেনী শহরের শহীদ শহীদুল্লা কায়সার সড়কে যানবাহন চলাচলে বাধা দেন। পুলিশকে লক্ষ্য করে ককটেল বিস্ফোরণ, গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করেন। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে পৃথক দুটি মামলা করেছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ফেনী জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আলাল উদ্দিন আলাল মুঠোফোনে বলেন, পুলিশ নিজেরা অতি উৎসাহী হয়ে বিএনপির নেতা–কর্মীদের হয়রানি ও নীলনকশার একতরফা নির্বাচন সম্পন্ন করার উদ্দেশ্যে এসব গায়েবি মামলা করে বিএনপিকে মাঠছাড়া করার চেষ্টা করছে। নেতা–কর্মীরা বাড়িঘরে থাকতে পারছেন না। এসব মামলা রাজনৈতিক হয়রানির উদ্দেশ্যে করা। তিনি পুলিশের অতি উৎসাহী ভূমিকার তীব্র নিন্দা জানান। গ্রেফতারকৃতদের দ্রুত মুক্তির দাবি জানান।
ফেনীর পুলিশ সুপার জাকির হাসান বলেন, ক্ষতিকর কাজে লিপ্ত থাকলে পুলিশ কাউকে ছাড় দেবে না। জনগণের জানমাল রক্ষার দায়িত্ব পালন করেছে পুলিশ। যাঁদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, তাঁদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলমান।
আরও পড়ুন: বিএনপির ডাকা দশম দফার অবরোধ চলছে
মোরশেদ আলম/দীপ্ত নিউজ