জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ মীর মুগ্ধের যমজ ভাই মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ স্বৈরাচার পতনের পর থেকেই বেশ পরিচিত মুখ। সেই স্নিগ্ধ গত ৪ নভেম্বর বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপিতে যোগদান করেছেন।
মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ জানিয়েছেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান চান, আমি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের হয়ে তরুণদের প্রতিনিধিত্ব করি–যা আমারও অন্যতম রাজনৈতিক আকাঙ্ক্ষা।
বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে তিনি এ তথ্য জানান।
বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আলোচনার জন্ম দেয়। তবে তার সমালোচনাও কম হয়নি। কেন তিনি বিএনপির রাজনীতিতে যোগ দিয়েছেন, তা নিয়ে আলোচনা কম হচ্ছে না। তবে এবার মীর স্নিগ্ধ নিজেই জানিয়েছেন, কেন তিনি বিএনপিতে যোগ দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, বিএনপিতে যোগ দেওয়ার পেছনে নিয়ামক হিসেবে কাজ করেছে ২টি কারণ।
পোস্টে মীর স্নিগ্ধ লেখেন, জুলাইয়ের পর থেকে তরুণদের মধ্যে নতুন বাংলাদেশ গঠনের যে জোয়ার উঠেছে, সেই তরুণদের একজন প্রতিনিধি হিসেবে আমি বিভিন্ন সামাজিক কার্যক্রমে যুক্ত থেকেছি। পাশাপাশি তরুণদের মাধ্যমে ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ গড়ার যে রাজনৈতিক পরিবর্তনের প্রচেষ্টা চলছে, সেই লক্ষ্যে রাজনীতিতে যুক্ত হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছি।
তিনি লেখেন, ‘আপনারা জানেন, আমি বা আমার ভাইদের কেউই রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলাম না। মুগ্ধ একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবেই দেশের জন্য জীবন দিয়েছে। তাই আমি মনে করি, মুগ্ধসহ সকল শহীদ কোনো রাজনৈতিক দলের নয়–তারা দেশের সম্পদ।’
স্নিগ্ধ আরও জানান, ‘বর্তমান প্রেক্ষাপটে এবং নতুন বাস্তবতায় সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তে বাংলাদেশের একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করছি। আমি নিজের যোগ্যতায় এগিয়ে যেতে চাই।’
নিজের রাজনৈতিক আকাঙ্ক্ষার পেছনের কারণ উল্লেখ করে তিনি লেখেন, ‘আমার অন্যতম লক্ষ্য হলো সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে ‘জুলাই’–কে প্রতিনিধিত্ব করা। অরাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম থেকে জুলাইকে নানাভাবে প্রতিনিধিত্ব করেছি; এখন সময় এসেছে রাজনৈতিকভাবে জুলাইয়ের প্রতিনিধিত্ব করার।’
তিনি আরও লেখেন, ‘রাজনৈতিক দল হিসেবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলে যোগদানের কয়েকটি কারণ রয়েছে। প্রথমত, বিএনপির দীর্ঘ রাজনৈতিক সংগ্রামের ইতিহাস রয়েছে, তাছাড়া দলের রাজনৈতিক দর্শন ও ‘রাষ্ট্র মেরামতের ৩১ দফা রূপরেখা ২০২৩’–এর অনেক জায়গা আছে, যেগুলো নিয়ে সরাসরি কাজ করতে আমি আগ্রহী। দ্বিতীয়ত, আমি মনে করি, সব পরিসরে জুলাইয়ের প্রতিনিধিত্ব থাকা জরুরি। তাই বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হচ্ছি। এতে জুলাইয়ের ঐক্য আরও শক্তিশালী ও দীর্ঘস্থায়ী হবে বলে আমি বিশ্বাস করি।’
তিনি মনে করেন, রাজনীতিতে তার যোগদানের মাধ্যমে জাতীয়তাবাদী দল ও তরুণ প্রজন্মের মধ্যে একটি সেতুবন্ধন তৈরি হবে। তবে তিনি বাংলাদেশের সকল রাজনৈতিক দল ও জুলাইপন্থী অংশীজনদের সঙ্গে কাজ করার ইচ্ছাও প্রকাশ করেছেন।
স্নিগ্ধ বলেন, ‘রাজনৈতিক ঐক্যের মাধ্যমে সুন্দর বাংলাদেশ গঠনই আমার অন্যতম রাজনৈতিক লক্ষ্য।’
শেষে নিজের এই নতুন পথচলায় সকলের সহযোগিতা ও পরামর্শ কামনা করে তিনি লিখেছেন, ‘এতদিন যত দায়িত্ব পালন করেছি, সবই নিষ্ঠা ও সততার সঙ্গে করেছি। যদি কোনো অভিযোগ থাকে, অনুগ্রহ করে তা প্রমাণসহ উপস্থাপন করুন এবং গঠনমূলক সমালোচনা করুন। নতুন বাংলাদেশে আমরা অন্তত এতটুকু সংস্কার আশা করতে পারি।’