নিরবপল্লীতে শোকে বিহ্বল আত্মীয় স্বজনেরা লাশ দাফনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। বাড়ির বাহিরে মাইকে এলান করছে জানাযা ও মাটি দেয়ার সময়। এমন অবস্থায় বাবার লাশ বাড়িতে রেখে স্বর্ণা আক্তার মিশু নামের এক শিক্ষার্থীকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে হলো। পরীক্ষা কেন্দ্রে থাকায় বাবার দাফনে অংশ নিতে পারেনি সে। দীর্ঘদিন যাবৎ পাকস্থলিতে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে বাবা মোঃ আবদুল্লাহ (৫০) মারা গেছেন।
নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলায় বুধবার (১০ মে) এ ঘটনা ঘটে। স্বর্ণা আক্তার মিশু উপজেলার শহীদ জয়নাল আবেদীন সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থী।
স্বর্ণা আক্তার মিশু পরীক্ষার কেন্দ্র পড়েছে সুবর্ণচর–১ এর চরজব্বার ডিগ্রি কলেজে। সকাল ১০ টার আগে এক আত্মীয়ের সাথে ওই কেন্দ্রে যায় সে। সকলের সহযোগিতায় পরীক্ষায় অংশ নেয় সে।
স্বর্ণা আক্তার মিশুর পরিবার ও স্থানীয় লোকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, চরজুবিলী ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের হানিফ চেয়ারম্যান বাড়ির মোঃ আবদুল্লাহ। তাঁর ছোট মেয়ে এবার এসএসসি পরীক্ষার্থী। মঙ্গলবার দিবাগত রাত সোয়া ১টার দিকে আবদুল্লাহর মৃত্যু হয়। তার মৃত্যুতে বাড়িজুড়ে কান্নার রোল পড়ে। বাবার মৃত্যুর পর স্বর্ণা আক্তার মিশু ভেঙে পড়লেও আত্মীয় স্বজনদের কথায় এসএসসি পরীক্ষার কেন্দ্রে পরীক্ষা দিতে যায় সে।
কেন্দ্রসচিব কাজী নজরুল ইসলাম বলেন, ‘স্বর্ণা আক্তার মিশুর বাবার মৃত্যুর বিষয়টি আমরা পরীক্ষা কেন্দ্রে আসার পর জানতে পেরেছি। সহপাঠীদের সঙ্গে বসে পরীক্ষা দিয়েছে। আমরা চেয়েছিলাম সে সবার সঙ্গে স্বাভাবিকভাবেই পরীক্ষা দিক। তবে তাকে শোকাভিভূত হতে দেখেছি । সবার সাথে পরীক্ষা দিলে তার জন্য ভালো হবে ভেবে বিশেষ কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
সুবর্ণচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা চৈতী সর্ববিদ্যা বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘বাবার লাশ বাড়িতে রেখে পরীক্ষা কেন্দ্রে আসা যে কারও জন্য খুবই কষ্টদায়ক। তারপরও স্বর্ণা নিজের ভবিষ্যেতের কথা চিন্তা করে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে।‘
আল/দীপ্ত সংবাদ