শুক্রবার, নভেম্বর ২২, ২০২৪
শুক্রবার, নভেম্বর ২২, ২০২৪

পার্বত্য অঞ্চলে কিছু গোষ্ঠী বিভ্রান্তি সৃষ্টির চেষ্টা করছে: চবি উপাচার্য

Avatar photoদীপ্ত নিউজ ডেস্ক

 

চট্টগ্রাম সেন্টার ফর রিজিওনাল স্টাডিজ, বাংলাদেশের (সিসিআরএসবিডি) আয়োজনে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) অনুষ্ঠিত হয়েছে ‘সশস্ত্র সংঘাত ও তথ্য বিভ্রান্তির বিরুদ্ধে ছাত্রযুবসমাজের ভূমিকা’ শীর্ষক আলোচনাসভা।

আলোচনাসভায় চবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের বলেন, পার্বত্য অঞ্চলে কিছু গোষ্ঠী উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবেই বিভ্রান্তি সৃষ্টির চেষ্টা করছে। এ দেশের মানুষের মৌলিক অধিকারগুলো আমাদের সংবিধানে বিস্তারিত বলা আছে। বঙ্গবন্ধু এ বিষয়গুলো সম্পর্কে ধারণা রাখতেন বলেই সংবিধানে সব ধর্মবর্ণের মানুষের অধিকার সমানভাবে যুক্ত করেছেন।

মঙ্গলবার (১১ জুন) বেলা ২টায় চবি উপাচার্যের সম্মেলন কক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক তন্ময়ী হাসানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উপউপাচার্য (প্রশাসনিক) অধ্যাপক ড. মো. সেকান্দর চৌধুরী। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন চবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের, বিশেষ অতিথি চবি উপউপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক বেণু কুমার দে। বক্তব্য দেন রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ও সিসিআরএসবিডির নির্বাহী পরিচালক ড. মাহফুজ পারভেজ, সিসিআরএসবিডির পরিচালক রাজকুমার সুই চিং প্রু, ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনোয়ারুল ইসলাম এবং আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ আল ফারুক।

অধ্যাপক ড. মাহফুজ পারভেজ বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তিকে সম্পূর্ণরূপে বাস্তবায়ন করতে হবে। শান্তি একটা রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। এখানে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে হলে সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের মাধ্যমে চূড়ান্ত করতে হবে। পার্বত্য এলাকার পিছিয়ে পড়া তরুণ সমাজকে আদর্শ শিক্ষায় শিক্ষিত করতে হবে। অস্ত্রের মুখে কোনো সমস্যার সমাধান করা সম্ভব না। পাহাড়ে যেভাবে সন্ত্রাস জঙ্গিবাদ চলছে, তা কারও অজানা নয়। আমাদের সচেতনভাবে সেগুলো মোকাবিলা করতে হবে।

অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ আল ফারুক বলেন, স্বাধীনতার দীর্ঘ দুই যুগ পরে পার্বত্য চট্টগ্রামের সঙ্গে যে শান্তিচুক্তি হয়েছিল, তা ছিল পৃথিবীর ইতিহাসে একটি অনন্য ঘটনা। কারণ তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ ছাড়াই এ চুক্তি হয়েছিল। পার্বত্য অঞ্চলের মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত করার লক্ষ্যে সরকার অনেক উদ্যোগ নিয়েছে। সেখানে স্কুল, কলেজ, মেডিক্যাল থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ও করা হয়েছে। কিন্তু কিছুদিন আগ থেকে কুকিচিন নামে একটি সশস্ত্র বাহিনী সংঘাত সৃষ্টি করছে। অথচ পৃথিবীর কোথাও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীকে এত সুযোগসুবিধা দেওয়া হয়নি। তাই এ সংঘাতের মাধ্যমে তারা শান্তিচুক্তির যে উদ্দেশ্য, সেটাকে ব্যাহত করছে। উন্নয়ন প্রক্রিয়া মূলত কাউকে বাদ দিয়ে নয়, বরং সবাইকে নিয়েই বাস্তবায়ন করতে হয়। পার্বত্য অঞ্চলের এ বহুমুখী সংঘাত যদি বন্ধ না হয়, তাহলে তাদের যে বিশেষ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে, সেগুলো আরও সংকীর্ণ হয়ে আসার আশঙ্কা রয়েছে। বাংলাদেশের ভূখণ্ড রক্ষায় যা যা করার, আমরা সবই করব। যুবসমাজের প্রতি আমার আহ্বান, আপনারা কোনোভাবে বিভ্রান্ত হবেন না।

সিসিআরএসবিডির পরিচালক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, দ্বন্দ্ব থেকে সংঘাত, সেখান থেকে সশস্ত্র সংঘাতে রূপ নিয়েছে কুকিচিনের এ বিদ্রোহ। ২০২১ সালের পরেই দেখা যাচ্ছে জোজাতীয়তাবাদ। এটি খুব উগ্র একটি জাতীয়বাদ বলেই ধারণা করা হচ্ছে। যার ফলে এ পার্বত্য অঞ্চল ক্রমান্বয়ে অশান্ত হয়ে উঠছে। মূলত পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রাচীন ইতিহাসই আমরা স্পষ্ট করতে পারিনি। তাই আমাদের যুবসমাজ বিভ্রান্ত। এগুলো আমাদের জানতে হবে, জানাতে হবে।

সভাপতির বক্তব্যে চবি উপউপাচার্য (প্রশাসনিক) অধ্যাপক ড. মো. সেকান্দর চৌধুরী বলেন, পার্বত্য অঞ্চলের সঙ্গে যে শান্তিচুক্তি, সেখানের ৭৫টি দাবির মধ্যে ৫০টির বেশি ইতিমধ্যে পূরণ করা হয়েছে। অথচ আমরা দেখছি একটি সশস্ত্র গোষ্ঠী সংঘাত সৃষ্টি করছে। যার ফলে শান্তিচুক্তি ভঙ্গ হওয়ার ব্যাপক আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। উন্নয়নের ক্ষেত্রে সরকারের আন্তরিকতার কোনো অভাব নেই। সেটা একবার পার্বত্য অঞ্চল ঘুরে এলেই উপলব্ধি করা যায়। অনেকের লোলুপ দৃষ্টি আছে আমাদের এসব ভূখণ্ডের প্রতি।

 

এসএ/দীপ্ত সংবাদ

আরও পড়ুন

সম্পাদক: এস এম আকাশ

অনুসরণ করুন

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন

স্বত্ব © ২০২৩ কাজী মিডিয়া লিমিটেড

Designed and Developed by Nusratech Pte Ltd.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More