ফেনীর সোনাগাজী উপজেলায় ফেনী নদীতে মাছের প্রজনন মৌসুমে নিষেধাজ্ঞা মানায় সুফল পাচ্ছেন জেলেরা। জেলেদের জালে ধরা পড়ছে ইলিশ মাছের ঝাঁক। প্রতিটি ইলিশের ওজন প্রায় এক থেকে দুই কেজি।
সোমবার (২৮ আগস্ট) সকালে ইলিশ ধরতে ১০টি ট্রলার ও নৌকা নিয়ে উপজেলার চর খোন্দকার ও আদর্শগ্রাম এলাকার ৩৫ থেকে ৪০ জন ফেনীর বড় ও ছোট নদীর শেষ প্রান্তে বঙ্গোপসাগরের মোহনায় জেলেরা দুই দফা জাল ফেলেন।
জাল টেনে নৌকায় তুলতেই সবাই দেখতে পান, বড় বড় ইলিশ ধরা পড়েছে। এর মধ্যে আটটির ওজন আড়াই কেজি, ৩৫টির ওজন দুই কেজির বেশি। ছোট–বড় সব মিলে প্রায় ২৫ থেকে ৩০ মণ ইলিশ ওঠে ওই জালে।
জেলে আবদুল কাদের বলেন, পৌর শহরের পাইকারি মাছ বিক্রেতা আবদুল মান্নান, মিন্টু মিয়া, জাফর আহমেদসহ কয়েকজন ব্যবসায়ী যৌথভাবে নয় লাখ ৮০ হাজার টাকায় তাঁদের প্রায় ৩০ মণ ইলিশ কিনে নেন।
মৎস্য ব্যবসায়ী আবদুল মান্নান বলেন, মাছগুলো বিক্রি করার জন্য সোমবার সন্ধ্যায় ও মঙ্গলবার সকালে পৌর শহরের মাছবাজারে নিয়ে আসেন তাঁরা। উৎসুক অনেকে বড় ইলিশ দেখতে বাজারে ভিড় করেন। আড়াই কেজি ওজনের ইলিশ ২ হাজার টাকা, দুই কেজির ইলিশ এক হাজার ৮০০ টাকা ও এক কেজির ইলিশ এক হাজার ৫০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন তাঁরা। সব মিলে অন্তত ১০ লাখ ৫০ হাজার টাকার মাছ বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা করছেন তিনি।
বাজারে কথা হয় মোহাম্মদ মোস্তাকিম নামের এক ক্রেতার সঙ্গে। তিনি বলেন, ইলিশ তাঁর প্রিয় মাছ। বড় ইলিশ দেখে তিনি আড়াই ও দুই কেজি ওজনের পাঁচটি ইলিশ ২০ হাজার ৫০০ টাকা দিয়ে কিনেছেন। বড় মাছ দেখে বাড়ির সবাই খুব খুশি হবে বলে জানান তিনি।
সাধারণ ক্রেতাদের অভিযোগ, নিত্যপণ্য ও খাদ্যসামগ্রীর বাজারের মতো মাছের বাজারেও সিন্ডিকেট হয়ে গেছে। ব্যাপারীরা নদীর তীরের ঘাট ও আড়ত থেকে কম দামে প্রচুর পরিমাণে মাছ কিনে বাজারে নিয়ে আসেন। পরে সেই মাছের অর্ধেক ফ্রিজে লুকিয়ে রেখে বাজারে মাছের কৃত্রিম সংকট তৈরি করেন। এসব অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান ক্রেতারা।
সোনাগাজী উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা তূর্য সাহা বলেন, সরকারি বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা মেনে চলায় স্থানীয় জেলেরা উপকৃত হচ্ছেন। ফলে নদী ও সাগরে টানা ও বসানো জালে এখন ইলিশসহ বিভিন্ন প্রজাতির প্রচুর পরিমাণ মাছ ধরা পড়ছে। সামনে আরও বড় বড় মাছ ধরা পড়বে বলে আশা করছি।
আবদুল্লাহ আল–মামুন/শায়লা/দীপ্ত নিউজ