সোনাদিয়া। দেশের দক্ষিন পূর্বাঞ্চলের এক জনবিরল উপকূলীয় দ্বীপ। জীববৈচিত্র, পাখীর বৈচিত্রময় উপস্থিতি আর জলচর নানা প্রাণীতে সমৃদ্ধ এই দ্বীপের উপকূল বেষ্ঠিত জলরাশি। জনবিরল হবার কারনে দ্বীপটির সমূদ্র সৈকত সদা সর্বদাই থাকে পরিচ্ছন্ন। কোলাহলমুক্ত, দূষনমুক্ত, নির্জন পরিবেশের এই দ্বীপে পর্যটক বা ভ্রমনার্থীদের পদচারনা খুব ই কম। কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত থেকে মাত্র সাত আট কিলোমিটার দূরে এমন জনবিরল দ্বীপের অবস্থান সত্যিই বিস্ময়কর। দ্বীপটির তিন দিকে সমূদ্র এবং এক দিকে মহেশখালী চ্যানেল দ্বারা দ্বীপটি কক্সবাজারের মূল ভূখন্ড থেকে বিচ্ছিন্ন। কক্সবাজার জেলার মহেশখালী উপজেলার কুতুবজোম ইউনিয়নে এই দ্বীপের অবস্থান। সাধারন ভ্রমনার্থীদের যাতায়াতের কোন নিয়মিত বাহন নেই। এই দ্বীপে যেতে নিজ উদ্যোগে রিজার্ভ স্পীডবোট বা যন্ত্রচালিত নৌকায় যেতে হয়। দিনে গিয়ে দিনেই ফিরে আসা ভাল কারন সেখানে কোন আবাসিক হোটেল তো দূরে থাকুক খাবার হোটেল পর্যন্ত নেই।
২০১৮ সালের মার্চ মাসে একটা শিশুতোষ টেলিভিশন সিরিজের স্যুটিং এর জন্য সেখানে দুই দিন একরাত অবস্থান করেছিলাম। সে এক বিচিত্র অভিজ্ঞতা। কক্সবাজার থেকে বাজার করে স্থানীয় এক অধিবাসীকে অনুরোধ করে তার বাড়ীতে রান্না, খাওয়া ও থাকার ব্যবস্থা করা হয়। মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্ক থাকলেও তা খুব ই দূর্বল। দ্বীপের যে সামান্য কয়েক ঘর জনবসতি আছে তাও বিভিন্ন স্থানে ছড়ানো ছিটানো। দ্বীপটির মোট আয়তন মাত্র নয় বর্গ কিলোমিটার। অধিবাসীদের একমাত্র উপার্জনের পথ মৎস্য শিকার এবং তা থেকে শুটকী তৈরী করা। বনবিভাগ থেকে উপকূলীয় এলাকায় এবং দ্বীপের মাঝে ইউক্যালিপ্টাস, ঝাউ ইত্যাদি গাছ লাগানো হয়েছে। এত জনবিরল দ্বীপেও এসব গাছ অনেকেই কেটে বনাঞ্চল উজার করছে যা প্রাকৃতিক পরিবেশের জন্য খুব ই বিপজ্জনক।
ছবিতে যে সমূদ্র সৈকতটি দেখা যাচ্ছে তা দ্বীপের উত্তর পূর্বদিকে অবস্থিত। একটি মৃত সামূদ্রিক কাছিমের খোলস পরে আছে সমূদ্র সৈকতে। এমন অনেক মৃত প্রাণী, গাছের গুড়ি, উদ্ভিদের খন্ডাংশ সহ অনেক নাম না জানা দ্রব্য ভেসে আসে সমূদ্র সৈকতে। বিষয়টি স্থানীয় জনসাধারনের কাছে এতটাই স্বাভাবিক যে কারনে এগুলি সংগ্রহ বা আহরনের প্রতিও কারো আগ্রহ নেই।
১৩