বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, দেশে স্বৈরশাসনের কবর রচনা করতে চায় বিএনপি। আইন, বিচার ও নির্বাহী বিভাগের মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য রাখতে চায়, রাষ্ট্র পরিচালনায় সমাজের জ্ঞানী–গুণীদের প্রতিনিধিত্ব ও অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে দুই কক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্ট ব্যবস্থা প্রবর্তন করতে চায়। দেশে আর কোনোদিন কেউ যাতে ক্ষমতা কুক্ষিগত করে স্বৈরাচারী না হয়ে উঠতে পারে সেটা নিশ্চিত করতে বিএনপি সংবিধানে এমন ব্যবস্থা রাখতে চায় যাতে, কেউ যেন পরপর দুই বারের বেশি প্রধানমন্ত্রী হতে না পারে।
রবিবার (১ সেপ্টেম্বর) কুমিল্লা ও ফরিদপুরের নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তারেক রহমান এসব কথা বলেন। বিএনপির মিডিয়া সেল থেকে পাঠানো এক বার্তায় এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়।
বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘গত ৫ আগস্ট স্বৈরাচার পতনের সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশের মানুষের প্রত্যাশায় যুক্ত হয়েছে নতুন আশাবাদ আর পরিবর্তিত হয়েছে ভাষা। এই পরিবর্তিত নতুন ভাষা পড়তে ও বুঝতে হবে, আর আশাবাদকে বাস্তবে রূপ দিতে হবে, তা না পারলে ছিটকে পড়তে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এতদিন শুধু আওয়ামী লীগ ছিল প্রকাশ্য প্রতিপক্ষ। আমরা তাদের আক্রমণের ধরন বুঝতাম ও জানতাম। এখন ওরা ছাড়াও চারিদিকে অসংখ্য অদৃশ্য প্রতিপক্ষ, এদের অবস্থান অন্ধকারে।’ এরা সর্বত্র এমনটা মনে করিয়ে এই দৃশ্যমান আর অদৃশ্যমান প্রতিপক্ষ মোকাবিলায় সদা সর্বদা সজাগ এবং সতর্ক থাকার আহ্বান জানান তারেক রহমান।
বিএনপির রাষ্ট্র কাঠামো সংস্কারের পরিকল্পনার কথা বলতে গিয়ে গত বছর জুলাইয়ে উপস্থাপিত ৩১ দফা কর্মসূচির মৌলিক বিষয়গুলো তুলে ধরে তারেক রহমান বলেন, ‘বিএনপি ভবিষ্যতে এ দেশে স্বৈরশাসনের কবর রচনা করতে চায়। আইন, বিচার ও নির্বাহী বিভাগের মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য রাখতে চায়, রাষ্ট্র পরিচালনায় সমাজের জ্ঞানী–গুনীদের প্রতিনিধিত্ব ও অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে দুই কক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্ট ব্যবস্থা প্রবর্তন করতে চায়। তরুণ ও বেকারদের জন্য কর্মসংস্থান আর কর্মসংস্থান না হওয়া পর্যন্ত যোগ্যতা অনুযায়ী ভাতা প্রবর্তন করতে চায়।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিএনপি নিশ্চিত করতে চায় সর্বস্তরে নারীর অংশগ্রহণ। স্বাস্থ্য, শিক্ষা, কৃষি, অর্থনীতি সব ক্ষেত্রে আনতে চায় যুগোপযোগী আমূল পরিবর্তন। গড়তে চায় ধর্ম, বর্ণ, গোত্র, গোষ্ঠী, সমতল, পাহাড়ি নির্বিশেষে এক সুষম সমঅধিকারের আধুনিক বাংলাদেশ। তিনি দলের সব নেতাকর্মীদের এই বার্তা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছানোর নির্দেশ দেন।’
বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ও দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার সফলতা আর জনপ্রিয়তার একমাত্র ভিত্তি ছিল দেশের সর্বস্তরের মানুষের অকৃত্রিম ভালোবাসা। এ দেশের মানুষের প্রাণঢালা ভালোবাসা আর আস্থাই বিএনপির একমাত্র শক্তি। জনগণের এই প্রতিষ্ঠিত ভালোবাসাকে যেকোনো মূল্যে রক্ষা করতে হবে। কোনোভাবেই এটা বিনষ্ট করা যাবে না।’ আর কেউ যদি কোনো অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়, তাহলে সে যত বড়ই হোক দল তাকে বিন্দুমাত্র প্রশ্রয় দেবে না বলে হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
বিএনপি পরিবার ঐক্যবদ্ধ থাকলে যেকোনো ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে অতীতের মতো আবারও দল হিসেবে সফল হবে এমন আশাবাদও ব্যক্ত করেন তারেক রহমান।