জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ছাত্রদের ২১ নং হলের কক্ষে আটকে নবীন শিক্ষার্থীদের র্যাগিংয়ের অভিযোগে প্রাণরসায়ন ও অণুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের ১৬ জন শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
সোমবার (১৩ অক্টোবর) বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ কার্যালয়ের প্রকাশিত এক জরুরি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীরা হলেন– প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের ৫৩ ব্যাচের শিক্ষার্থী মো. তানভীর রহমান মুন, মো. আব্দুল্লাহ আল ফাহাদ, আব্দুল্লাহ আল সাঈদ, মো. আবু তালহা রনি, রাজিব শেখ, এস. এম. মাহামুদুন্নবী, মো. আবু সাইদ, জান্নাতুল আদন, আহম্মেদ আরেফিন রাতুল, তাসনিমুল হাসান জুবায়ের, মো. মাহামুদুল হাসান ফুয়াদ, মো. আল হাসিব, মো. আব্দুল্লাহ আল নোমান, মো. রাকিবুল হাসান, মো. জাহিদুল ইসলাম এবং উশান্ত ত্রিপুরা।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রবিবার (১২ অক্টোবর) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১ নম্বর ছাত্র হলের ৪০৩ নম্বর কক্ষে ওই বিভাগের ৫৪তম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে র্যাগিংয়ের ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কামরুল আহসানের নির্দেশে ‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের জন্য প্রণীত শৃঙ্খলা সংক্রান্ত অধ্যাদেশ ২০১৮’–এর ধারা ৪(১)(খ) অনুযায়ী এ বহিষ্কারাদেশ জারি করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, সোমবার (১৩ অক্টোবর) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের সংশ্লিষ্ট শাখা থেকে এক অফিস আদেশে বিষয়টি জানানো হয়। একইসঙ্গে ঘটনার তদন্তে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এর আগে রবিবার (১২ অক্টোবর) রাত ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১ নম্বর ছাত্র হলের ৪০৩ নম্বর কক্ষে র্যাগিংয়ের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত সাংবাদিক, হলগার্ড, হল সংসদের প্রতিনিধিরা গিয়ে দেখেন দ্বিতীয় বর্ষের ১৫ জন শিক্ষার্থী প্রথম বর্ষের ২০ শিক্ষার্থীকে র্যাগ দিচ্ছিলেন।
হল সূত্রে জানা গেছে, ওই কক্ষে নবীন শিক্ষার্থীদের র্যাগিং করা হচ্ছে এমন তথ্য আসে হল সংসদের কয়েকজন প্রতিনিধির কাছে। তারা বিষয়টি হল কর্তৃপক্ষ ও সাংবাদিকদের জানান। পরে হল কর্তৃপক্ষ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমতি নিয়ে হল সংসদের প্রতিনিধিরা হলের দুজন গার্ড ও সাংবাদিকদের সঙ্গে ওই কক্ষে যান। এ সময় তারা নবীন শিক্ষার্থীদের র্যাগ দেয়ার সময় দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীদের হাতেনাতে ধরেন।
হল সংসদ প্রতিনিধি ও গার্ডরা জানায় র্যাগিংয়ের খবর পেয়ে সেখানে গিয়ে কক্ষটি সম্পূর্ণ অন্ধকার এবং দরজা–জানালা বন্ধ অবস্থায় দেখতে পান। একপর্যায়ে লাইট জ্বালালে সেখানে প্রাণ রসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের প্রথম বর্ষের প্রায় ২০ জন শিক্ষার্থীকে ভীতসন্ত্রস্ত অবস্থায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেন। র্যাগিংয়ের সময় তাদের মোবাইল ফোন কেড়ে বন্ধ করে রাখা হয়েছিল। এ ছাড়া একসঙ্গে এত শিক্ষার্থী সেখানে অবস্থানের কারণ জানতে চাইলে প্রাথমিকভাবে ভুক্তভোগীরা ভয়ে কথা বলতে রাজি হয়নি।