কেন্দ্রীয় ১৪ দলীয় জোটের মতামতের ভিত্তিতে সরকার জামায়াত–শিবিরকে নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট জামায়াত–শিবিরকে নিষিদ্ধ করার যে মতামত দিয়েছেন, তা আইনগত দিক ভালোভাবে দেখে সরকার বাস্তবায়ন করবে। যাতে আইনের ফাঁকফোকর দিয়ে জামায়াত স্বাধীন দেশে আর রাজনীতির কোনো সুযোগ না পায়।’
রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত যৌথ সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
ঢাকা মহানগর উত্তর–দক্ষিণ ও ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ এবং সকল সহযোগী সংগঠনের সভাপতি–সাধারণ সম্পাদকদের সঙ্গে এই যৌথ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
যৌথ সভার শুরুতে সংঘাতে নিহতদের আত্মার মাগফেরাত ও আহতদের আশু আরোগ্য কামনায় দোয়া পরিচালনা করা হয়। পরে নিহতদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন নেতারা।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, জামায়াত–শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার জন্য দীর্ঘ দিন থেকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক সংগঠন, মুক্তিযোদ্ধা, নাগরিক সমাজ দাবি করে আসছে। শহীদ জননী জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে ‘একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মুল কমিটি’ সে সময়ে গঠিত গণআদালত, পরবর্তীতে গণজাগরণ মঞ্চের দাবিও ছিলো জামায়াত–শিবির নিষিদ্ধ করা। এছাড়া দেশের সর্বোচ্চ আদালতের রায়েও জামায়াতের নিবন্ধন বাতিলে হাইকোর্টের রায় বহাল রাখা হয়েছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের গণপ্রতিনিধিত্ব আইন অনুযায়ী, রাজনৈতিক দল হিসেবে নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন না থাকলে কোনো রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এমন নজির আছে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর হিটলারের নাৎসি পার্টি রাজনীতি করতে পারে নাই জার্মানিতে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক জামায়াতে ইসলামীকে দল হিসেবে যুদ্ধাপরাধের সাথে সংশ্লিষ্ট বলে উল্লেখ আছে। মূলত জামায়াত ধর্মের মুখোশ পরা সাম্প্রদায়িক অপশক্তি। নানা সময়ে তাদের দ্বারা প্রকাশ্য ও গোপনে নানা অপতৎপরতা নাশকতা, ষড়যন্ত্র রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকান্ডের সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া গেছে এবং দেশের জনগণ সেটা অবলোকন করেছে।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উদ্দেশে সড়ক পরিবহন মন্ত্রী বলেন, সংখ্যা বাড়াতে গিয়ে কোনো নিরপরাধ কাউকে গ্রেপ্তার করা যাবে না। অতি উৎসাহী হয়ে যাতে নিরপরাধ কাউকে গ্রেপ্তার করা না হয়, সে বিষয়ে আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে যে ষড়যন্ত্র হয়েছে–কোথায় বৈঠক হয়েছে, কোথা থেকে নির্দেশ এলো আর অর্থের জোগান কিভাবে হয়েছে? সব ষড়যন্ত্র এখন দিবালকের মত স্পষ্ট। জাতিকে বিভ্রান্ত করার সুযোগ আর নেই।
কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে কয়েক দিন যে সহিংসতা হয়েছে তাতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও আক্রান্ত হয়েছে দাবি করে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমাদের নেতাকর্মীরা নিরস্ত্র ছিল। সশস্ত্রদের দ্বারা তারা হামলার শিকার হয়েছে। এই ঘটনা প্রবাহে আমরা আক্রান্ত, আক্রমণকারী নই।
যৌথ সভায় আওয়ামী লীগের সভাপতিম–লীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম, কামরুল ইসলাম, ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন ও এডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম ও ডা. দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন,বি এম মোজাম্মেল হক, এস এম কামাল হোসেন ও মির্জা আজম, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক প্রকৌশলী আবদুস সবুর, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আল/ দীপ্ত সংবাদ