এক বছর পূর্ণ করলো ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানের পর শান্তিতে নোবেল বিজয়ী প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের মুখে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার ৩ দিন পর ৮ আগস্ট শপথ গ্রহণ করেছিল ড. ইউনূস সরকার।
দায়িত্ব নেওয়ার পরই ৫ শতাধিক দাবি–দাওয়ার আন্দোলনের মুখে পড়ে অন্তর্বর্তী সরকার। ফলে সরকারের স্থিতিশীলতা আসতে সময় লাগে অন্তত ৬ মাস। জুলাই শহীদদের আকাঙ্ক্ষা অনুসারে সরকার নির্বাচনী ব্যবস্থা, শাসনব্যবস্থা, গণমাধ্যম স্বাধীনতা, অর্থনীতি, বিচারব্যবস্থা, আইন–শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন‘সহ সব খাতে ইতিবাচক পরিবর্তন আনার লক্ষ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
গত ৫ আগস্ট জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তির দিনে ‘গণঅভ্যুত্থান দিবস’ উপলক্ষে অন্তর্বর্তী সরকার জাতির সামনে জুলাই ঘোষণাপত্র উপস্থাপন করে।
এদিকে, ৫ আগস্ট জাতির উদ্দেশে ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষ থেকে আমি প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে চিঠি পাঠাব, যাতে নির্বাচন কমিশন ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে, পরবর্তী রমজানের আগেই, জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন করে।’
যে আকাঙ্ক্ষা আর স্বপ্নকে ধারণ করে জুলাই অভ্যুত্থান ও নতুন সরকার যাত্রা শুরু হয়েছিল, তা এখনও অর্জিত হয়নি বলে মন্তব্য করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সাব্বির আহমেদ।
তিনি বলেন, চাঁদাবাজি দখলদারিত্বসহ ফ্যাসিবাদী আচরণ দমনে সরকার এখনও সফল নয়। তবে রেমিটেন্স প্রবাহ সচল থাকলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর জনগণের আস্থা এখনো ফেরেনি।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ১ বছরের কর্মকাণ্ড বিচার করে নয় বরং নানা চ্যালেঞ্জের মুখে সরকারের সদিচ্ছাকে বিবেচনায় নেয়াই হবে সফলতা বা ব্যর্থতার নির্ণায়ক।
তিনি আরও বলেন, ‘সব ক্ষেত্রে প্রায় সম্পূর্ণ ভেঙে পড়া একটি সিস্টেম নিয়ে শূন্য থেকে কাজ করতে হয়েছে নতুন সরকারকে। যেখানে পুরো রাষ্ট্রযন্ত্রের প্রায় সব ক্ষেত্রে একটি কল্যাণমুখী সিস্টেম গড়ে তোলার চেষ্টা করেছে সরকার। যা পরবর্তী সরকার এসে জনগণের কাছে পৌঁছে দেবে।’
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ইতোমধ্যে একাধিক সংস্কার কমিশন গঠন করেছে, যার মধ্যে রয়েছে: নির্বাচনী ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন, পুলিশ সংস্কার কমিশন, বিচারব্যবস্থা সংস্কার কমিশন, দুর্নীতি দমন সংক্রান্ত সংস্কার কমিশন, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন, স্বাস্থ্য সংস্কার কমিশন, গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন, শ্রমিক অধিকার সংস্কার কমিশন ও নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন।
এসব কমিশন তাদের সুপারিশমালা জমা দিয়েছে এবং সরকার অনেক ক্ষেত্রেই সেই সুপারিশ বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
এসএ