ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দেশের গুমের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ তুলেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)। সংস্থার সাম্প্রতিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক মেজর জেনারেল তারিক আহমেদ সিদ্দিক, মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান এবং পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা গুমের ঘটনায় জড়িত ছিলেন।
এইচআরডব্লিউ প্রকাশিত ‘আফটার দ্য মনসুন রেভ্যুলিউশন: এ রোডম্যাপ টু লাস্টিং সিকিউরিটি সেক্টর রিফর্ম ইন বাংলাদেশ‘ শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনার সরকারের অধীনে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার জোরপূর্বক গুমের ঘটনা ঘটেছে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, গুমের ঘটনা তদন্তকারী জাতীয় কমিশনের সদস্যরা বলছেন, এসব ঘটনার ব্যাপারে শেখ হাসিনা ও তার শীর্ষ কর্মকর্তারা সচেতন ছিলেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গুমের শিকার কয়েকজন ব্যক্তি, যেমন আইনজীবী মীর আহমাদ বিন কাসেম, তাঁদের আটক স্থানে ভয়াবহ নির্যাতনের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেছেন। কাসেম জানান, তাঁকে যেভাবে আটক রাখা হয়েছিল, তা ছিল ‘বন্দিদের মৃত্যুর চেয়েও খারাপ অভিজ্ঞতা দেয়ার জন্য ডিজাইন করা‘।
এইচআরডব্লিউ আরও জানায়, পুলিশের র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) এবং সামরিক কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে গঠিত সন্ত্রাসবিরোধী ইউনিট গুম, নির্যাতন এবং বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডে জড়িত। এরই মধ্যে, সরকারকে র্যাব ভেঙে দেওয়ার সুপারিশ করেছে জাতীয় তদন্ত কমিশন।
সংস্থাটি এও বলেছে, আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাজের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার জন্য জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের মাধ্যমে নিরপেক্ষ বেসামরিক তদারকি ব্যবস্থা গঠন জরুরি। পাশাপাশি, নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
এই প্রতিবেদনটি নিয়ে এখনও সরকারের পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি, তবে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ আশা প্রকাশ করেছে যে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপের মুখে বাংলাদেশ সরকার পরিস্থিতি শীঘ্রই সংশোধন করবে।
সূত্র: বাসস