শেরপুরের নালিতাবাড়ী ডালুকোনা দাওধারা গ্রামে ভুয়া দলিল তৈরি করে ক্ষুদ্র নৃ–গোষ্ঠীর গারো আদিবাসী সম্প্রদায়ের এক বিধবার জমিতে হঠাৎ ঘর নির্মাণ করে দখলের পায়তারা করছে স্থানীয় প্রভাবশালী এক ব্যক্তি।
দাওধারা গ্রামের জনৈক প্রভাবশালী ব্যক্তি আব্দুল মান্নান এই জমি দখলের অপচেষ্টা করছে। এতে বিপাকে পড়েছেন জমির প্রকৃত দখলদার মালিক জসপিনা নেংমিনজা।
জানা গেছে,ষাটের দশকে ভারতে চলে যাওয়া প্রবাসু কোচ নামের এক ব্যক্তির স্থলে ২০১১ সালে ভুয়া মালিক বানিয়ে ভিন্ন দলিল তৈরি করে ক্ষুদ্র নৃ–গোষ্ঠী সম্প্রদায়ের বিধবা জসপিনার জমি জবরদখলের চেষ্টা করছেন আব্দুল মান্নান।
নয়াবিল ইউনিয়নের ডালুকোনা মৌজার বর্তমান ২৪ নং খতিয়ানে ও ১১৪ নং দাগে ৪৬ শতক জমির প্রকৃত রেকর্ডীয় মালিক ছিলেন প্রবাসু কোচ। ষাটের দশকে প্রথমে গ্রাম্যভাবে ও পরবর্তীতে ১৯৬৩ সালের ৪ জুলাই প্রবাসু কোচ ওই জমি স্থানীয় তাজিমনি সাংমাকে রেজিস্ট্রি দলিলে বিক্রি করে দিয়ে ভারতে চলে যান।
তাজিমনির উত্তাধিকারসূত্রে ওই জমি প্রাপ্ত হন তারই কন্যা জসিন্তা সাংমা ওরফে আশুমণি সাংমা। ১৯৯৯ সালের ১২ এপ্রিল জসিন্তা সাংমা ওই জমি তার আপন ভাগ্নি জসপিনা নেংমিনজাকে সাব–কবলা রেজিস্ট্রি করে দেন। তবে নিজেদের ভোগদখলে থাকায় সহজ সরল ক্ষুদ্র নৃ–গোষ্ঠী গারো সম্প্রদায়ের তাজিমনি। জসিন্তা ও জসপিনা তাদের দখলীকৃত জমির নিজেদের নামে রেকর্ড বা নামখারিজ নিয়ে কখনো ভাবেননি। ফলে গোপনে সুযোগ নেন প্রতিবেশি আব্দুল মান্নান।
এদিকে জমি বিক্রির পর ১৯৬৪ সালে ভারতে চলে যাওয়া প্রবাসু কোচের স্থলে আব্দুল মান্নান ভুয়া প্রবাসু কোচ বানিয়ে ২০১১ সালের ৬ জানুয়ারি একই জমি দাওধারা গ্রামের চরিত্র চন্দ্র সরকারের নামে লিখে নেন। পরে চরিত্র সরকার ওরফে চরিত্র হাজং এর কাছ থেকে ওই জমি ২০২১ সালের ২৬ আগস্ট নিজ নামে লিখে নেন আব্দুল মান্নান। গত বছরের ১১ ডিসেম্বর ওই জমির নামখারিজও সম্পন্ন করেন আব্দুল মান্নান। এক পর্যায়ে বিষয়টি প্রকাশ হয়ে পড়লে চলতি বছর উপজেলা ভূমি কর্মকর্তার কার্যালয়ে ওই খারিজ বাতিল করতে আবেদন করেন জসপিনা নেংমিনজা।
চরিত্র চন্দ্র সরকার বলেন,আমি বুঝতেই পারি নাই যে, আমাকে এমন ভুয়া মালিক বানিয়ে মান্নান এমন প্রতারণা করছে।
আব্দুল মান্নান বলেন, চরিত্র চন্দ্র সরকার আমাকে জমি রেজিস্ট্রি করে দিয়েছে। যা আমি নামখারিজ করেছি এবং দখলে যাওয়ার চেষ্টা করছি।
মোরশেদ আলম/দীপ্ত নিউজ