গাজায় প্রয়োজনীয় ত্রাণ সরবরাহের সময় ইসরায়েলি বিমান হামলায় একটি দাতব্য সংস্থার সাতজন কর্মী নিহত হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স এবং যুক্তরাজ্য তীব্র নিন্দা জানিয়েছে।
‘ওয়ার্ল্ড সেন্ট্রাল কিচেন’ নামক দু’টি এনজিও’র একটি নৌকার সাহায্য ত্রাণ সামগ্রি বিতরণের সময়ে ইসরায়েলি হামলায় অস্ট্রেলিয়ান, ব্রিটিশ, ফিলিস্তিনি, পোলিশ এবং মার্কিন–কানাডিয়ান সাতজন কর্মীকে হত্যা করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, হামলার ঘটনায় তিনি ‘ক্ষুদ্ধ এবং হৃদয়বিদারক’। তিনি কঠোর ভাষায় এক বিবৃতিতে বলেছেন, ইসরায়েলকে ‘এই হামলার দ্রুত এবং নিরপেক্ষ তদন্ত করে জনসম্মুখে প্রকাশ করতে হবে।’
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বিমান হামলার ‘দ্রুত, নিরপেক্ষ তদন্ত’ করার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, নিরপরাধ বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষার জন্য ইসরায়েলকে আরও অনেক কিছু করতে হবে।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, হামলাটি ছিল ‘অনিচ্ছাকৃত’। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী হামলার তদন্ত করবে এবং ‘আমাদের তদন্তের রিপোর্ট স্বচ্ছভাবে প্রকাশ করার’ প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্টিফেন সেজার্ন প্যারিসে এক সংবাদ সম্মেলনে ব্লিঙ্কেনের সাথে একাত্বতা প্রকাশ করে বলেন, ‘মানবতাবাদী কর্মীদের সুরক্ষা একটি নৈতিক এবং আইনি বাধ্যতামূলক। যা সবাইকে অবশ্যই মেনে চলতে হবে। এমন মর্মান্তিক ঘটনাকে কেউ সমর্থন করে না।’
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক বলেছেন, নিহতদের মধ্যে একজন ব্রিটিশও রয়েছেন জেনে তিনি ‘মর্মাহত ও দুঃখিত।’
অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি অ্যালবানিজ ‘সম্পূর্ণভাবে অগ্রহণযোগ্য’ হামলার তীব্র নিন্দা করেছেন এবং এ ধরনের ‘মর্মান্তিক হামলা চালানো উচিত হয়নি’ বলে অভিহিত করেছেন। হামলায় নিহত অস্ট্রেলিয়ান স্বেচ্ছাসেবক লালজাওমি ‘জোমি’ ফ্রাঙ্ককমের পরিবারের প্রতি ‘আন্তরিক সমবেদনা জানিয়েছেন।
ওয়ার্ল্ড সেন্ট্রাল কিচেনের প্রতিষ্ঠাতা স্প্যানিশ বংশোদ্ভূত ইউএস–ভিত্তিক সেলিব্রিটি শেফ জোসে আন্দ্রেস বলেছেন, ‘নিহতদের পরিবার এবং বন্ধুবান্ধব এবং আমাদের ওয়াল্ড কিচেন সেন্টারের পুরো পরিবারের জন্য হৃদয়বিদারক ঘটনা।’
জর্ডান সফররত স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ বলেছেন, ‘আমি আশা করি ইসরায়েলি সরকার যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এই নৃশংস হামলার সম্পর্কে স্পষ্ট করবে।’ মঙ্গলবার জর্ডানে একটি ফিলিস্তিনি শরণার্থী শিবির পরিদর্শনকালে এমন মন্তব্য করেন।
ইইউ–এর পররাষ্ট্র নীতির প্রধান জোসেপ বোরেল বলেছেন, ‘বেসামরিক এবং মানবিক কর্মীদের সুরক্ষার জন্য সমস্ত দাবি সত্ত্বেও আমরা নিরীহ লোকদের হতাহতের ঘটনা দেখতে পাচ্ছি।’