গাইবান্ধা শহরের নতুন ব্রীজ এলাকায় পলো দিয়ে মাছ ধরার উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) সকাল থেকেই ঘাঘট নদীর নতুন ব্রীজ অভিমুখে জড়ো হতে থাকে নানা শ্রেণি পেশার বিভিন্ন বয়সী মানুষ। জেলার দ‚র–দূরান্ত থেকে আসা এসব মানুষের কারও হাতে পলো, আবার কারও হাতে ঠেলা জাল, খুইরা জাল, বাদাই জালসহ মাছ ধরার নানা উপকরণ। শতশত মানুষের হৈ হুল্লোড়ে নদী পাড়ে তৈরি হয় এক উৎসবমুখর পরিবেশ।
মাছ ধরতে এসে দেখা হয় বিভিন্ন গ্রামের মানুষের সঙ্গে। চলে একে–অপরের সঙ্গে কুশল বিনিময় আর হাসি–ঠাট্টা। আর এভাবেই চলে আসছে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর ঐতিহ্যবাহী মাছ ধরার উৎসব পলো দিয়ে মাছ শিকার। মাছ ধরার সময় সবার চোখে–মুখে খুশির ঝিলিক। কারো পলোতে বোয়াল ধরা পড়ে, আবার কারো জালে আঁইড়। মাছ ধরা পড়তেই চিৎকারে মুখোরিত হয়ে ওঠে চারপাশের পরিবেশ। এ যেন হারিয়ে যাওয়া এক মিলনমেলা।
পলাশবাড়ী উপজেলার প্রফুল্ল চন্দ্র বলেন, ‘প্রতিবছর আমরা এই পলো দিয়ে মাছ ধরতে বিভিন্ন জায়গায় যাই। এখানে মাছ ধরার চেয়ে আনন্দের পরিমাণ অনেক বেশি। বর্তমানে মাছের পরিমাণ অনেক কম‘। ফজলার মিয়া জানান, ‘আগে নদী এবং বিল গুলোতে ১০ থেকে ১৫ কেজির বড় বড় মাছ পাওয়া যেত। এখন নদীতে তেমন আর মাছ পাওয়া যায়না। মাছ ধরার এই উৎসবে এসে অনেকের সাথে দেখা হয়, আনন্দ হয়। এটাই বড় পাওয়া। এখনো মাছ পাওয়া যায়, তবে আগের মত আকারে বড় নয়‘।
জেলা মৎস কর্মকর্তা ফয়সাল আজম বলেন, ‘বর্তমানে নদী–নালা, খাল–বিলের সংকোচন, আধুনিক পদ্ধতিতে মাছ চাষ, ইত্যাদি কারণে দেশি প্রজাতির মাছের বংশ বিস্তার বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। তাই প্রাচীণ ঐতিহ্যের পলো দিয়ে মাছ শিকার এখন অনেকটাই বিলুপ্তির পথে। তবে আমরা দেশি প্রজাতির মাছ এবং তাদের বংশবৃদ্ধিতে কাজ করে যাচ্ছি‘।
এমি/দীপ্ত