চলমান পরিস্থিতিতে গতকাল রবিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে অনির্দিষ্ট কালের জন্য কারফিউ জারি করে সরকার। সাধারণত কোনও জায়গায় দাঙ্গা বা জনরোষ নিয়ন্ত্রণে নিতে কারফিউ জারি করা হতে পারে। চলুন জেনে নেওয়া যাক কারফিউ বা সান্ধ্য আইন কী?
কারফিউ বা সান্ধ্য আইন এমন এক ধরনের আইন যেখানে কোনও একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য বিশেষ ধরনের কর্মকাণ্ডকে নিষিদ্ধ করা হয়। ‘সান্ধ্য আইন’-এর আক্ষরিক অর্থ সন্ধ্যার সময় বা সন্ধ্যার পরে চলাচলের নিয়ম-কানুন। ইংরেজি কারফিউ শব্দটি এসেছে ফরাসি ভাষার ক্যুভর-ফ্যু শব্দ থেকে যার অর্থ অগ্নিনির্বাপণ। মধ্যযুগে ইংরেজি শব্দ ভাণ্ডারে কারফিউ হিসেবে আত্তীকরণ হয়। উইলিয়াম দি কনকরারের মতে, এই শব্দটির প্রকৃত অর্থ হলো, ‘কাঠের বাড়ি-ঘরে জ্বালানো আগ্নিশিখা এবং আগুনের প্রদীপ থেকে অগ্নিকাণ্ড প্রতিরোধের জন্য রাত ৮টার ঘণ্টা বাজার মধ্যেই সব আগ্নিশিখা ও আগুনের প্রদীপ নিভিয়ে ফেলার নিয়ম’।
আধুনিককালে এই আইনে কোনও একটা নির্দিষ্ট সময়ে চার জনের বেশি মানুষকে একত্রে কোনও পাবলিক প্লেসে জমায়েত হওয়া থেকে বিরত রাখার জন্য কারফিউ জারি করা হয়। কোনও জায়গায় দাঙ্গা বা জনরোষ যখন ভয়ঙ্কর রূপে দেখা দেয়, আর পুলিশ জনতাকে নিয়ন্ত্রণ করতে অসমর্থ হয় তখন এই আইন জারি করে। সমস্যার মাত্রার ওপর কাউফিউয়ের সময়কাল নির্ধারণ করা হয়। কখনও অনির্দিষ্টকালের জন্য কারফিউ জারি করা হয়। কোনও কোনও জায়গায় রাতে কারফিউ লাগে, কোনও জায়গায় দিনে কয়েক ঘণ্টার জন্য জারি করা হয়। কোনও কোনও সময় অল্প সময়ের জন্য কারফিউ তুলে বা শিথিল করে দেওয়া হয়, যাতে মানুষ নিজের বাজার-হাটের ব্যবস্থা করে ফেলতে পারে।
এই আইন জারি হলে সবাইকে বাড়ির ভেতরে থাকার আদেশ দেওয়া হয়ে থাকে। এই কারফিউ দেওয়ার কারণ হলো, কেউ যেন ঘরের বাইরে জমায়েত হয়ে দল বেঁধে আবার কোনও অশান্তির সৃষ্টি করতে না পারে।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এ কারফিউ বা সান্ধ্য আইন রয়েছে। বাংলাদেশে বিশেষ ক্ষমতা আইন; ১৯৭৪ সালে ২৪ ধারা অনুযায়ী জেলা প্রশাসনের ক্ষেত্রে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এবং মেট্রোপলিটন এলাকার ক্ষেত্রে পুলিশ কমিশনার সরকারের নিয়ন্ত্রণ সাপেক্ষে আদেশ জারির মাধ্যমে নির্দেশ করতে পারেন যে- কোনও বিশেষ লিখিত অনুমতি ছাড়া কেউ ঘরের বাইরে যেতে পারবে না। এই আইন লঙ্ঘন করলে ১ বছরের কারাদণ্ড বা জরিমানার বিধান রয়েছে।