ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) নির্বাচিত মেয়র ইশরাক হোসেনকে দ্রুত মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেয়ার দাবিতে নগর ভবনের সামনে টানা অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন ঢাকাবাসী। মঙ্গলবার (২০ মে) সকাল থেকেই গানে–স্লোগানে মুখর নগর ভবন এলাকা পরিণত হয়েছে এক উৎসবমুখর প্রতিবাদস্থলে।
নগর ভবন চত্বরজুড়ে সকাল থেকে চলছে বিপ্লবী গান, প্রতিবাদী কবিতা ও স্লোগান। আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে অংশ নিয়েছেন দেশের বিখ্যাত সংগীতশিল্পী ও আবৃত্তিশিল্পীরা।
সংগীত পরিবেশন করছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত শিল্পী পলাশ, প্রতিবাদী কণ্ঠের জন্য পরিচিত মৌসুমি ইসলাম, আবৃত্তিকার সোমা ইসলাম, সর্বজনস্বীকৃত সংগীত পরিচালক ইথুন বাবু।
আন্দোলনকারীদের দাবির প্রতি একাত্মতা জানিয়ে আন্দোলনের মঞ্চ থেকে গাওয়া হচ্ছে ইথুন বাবুর লেখা ও সুরারোপিত গান—‘ইশরাক আসছে, ঢাকা কাঁপছে; ইশরাক আসছে, নগর ভবন কাঁপছে।‘
অবস্থান কর্মসূচিতে আন্দোলনকারীরা— ‘অবিলম্বে ইশরাক হোসেনকে দায়িত্ব দাও‘; ‘দফা এক, দাবি এক—ইশরাককে দায়িত্ব দাও; ‘শপথ নিয়ে তালবাহানা চলবে না‘; ‘আসিফের পদত্যাগ চাই,’ ‘আসিফের কালো হাত ভেঙে দাও, গুঁড়িয়ে দাও‘ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।
সোমবার (১৯ মে) থেকে একটি ট্রাকের উপর অস্থায়ী মঞ্চ নির্মাণ করে এই সাংস্কৃতিক প্রতিবাদ শুরু হয়। শিল্পীরা মাঝে মাঝেই গান, কবিতা এবং স্লোগানের মাধ্যমে আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীদের উজ্জীবিত করছেন।
অবস্থান কর্মসূচিতে শুধু মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেয়ার দাবি নয়, স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজিব ভূঁইয়ার পদত্যাগ দাবিতেও উত্তাল আন্দোলনকারীরা। তাদের অভিযোগ, সজিব ভূঁইয়ার ‘কালো হাত‘ নগর পরিচালনায় স্বচ্ছতার পথে বড় বাধা।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাধারণ কর্মচারীরা ইতোমধ্যেই গত ১৬ মে থেকে আন্দোলনে যোগ দিয়েছেন। নগর ভবনে তালা ঝুলিয়ে দিয়ে তারা সব প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ রেখেছেন। এছাড়া আঞ্চলিক কার্যালয়গুলোতেও কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে।
এদিকে ফুলবাড়িয়া ব্যবসায়ী সমিতির নেতারাও ঢাকাবাসীর দাবির প্রতি সংহতি প্রকাশ করে অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন। তারা ব্যানার নিয়ে আন্দোলনকারীদের পাশে অবস্থান নেন এবং একযোগে স্লোগান দেন।
অন্যদিকে, সকাল থেকেই নগর ভবনের সামনে, বঙ্গবাজার মোড়, গোলাপ শাহ মাজার এবং গুলিস্তান চত্বর পর্যন্ত এলাকায় যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটে। রাস্তা বন্ধ করে রেখেছে বিক্ষুব্ধ আন্দোলনকারীরা। ফলে এসব এলাকায় তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ১৪ মে থেকে টানা অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে সাধারণ নগরবাসী। শনিবার ও রবিবার হাজারো মানুষের অংশগ্রহণে সচিবালয় অভিমুখে বিক্ষোভ হয়, আর সোমবার পালন করা হয় ‘নগর ভবন ব্লকেড’ কর্মসূচি। তবে, অবস্থানের ছয়দিন পেরিয়ে গেলেও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় কিংবা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া আসেনি।