ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) নির্বাচিত মেয়র হিসেবে ইশরাক হোসেনকে দ্রুত শপথ পড়িয়ে দায়িত্ব হস্তান্তরের দাবিতে নগর ভবনে চলছে ঢাকাবাসীর শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি। বৃহস্পতিবার (১৫ মে) সকাল ৯টা থেকে হাজারো মানুষ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে এসে ডিএসসিসির প্রধান কার্যালয়ের সামনে জড়ো হন।
বিক্ষোভকারীরা আদালতের রায় ও নির্বাচন কমিশনের গেজেটের আলোকে ইশরাক হোসেনকে বৈধ মেয়র দাবি করে তার শপথে বিলম্বের প্রতিবাদ জানান। নগর ভবনের মূল ফটকের বাইরে ও ভেতরে অবস্থান নিয়ে তারা ‘জনতার মেয়র ইশরাক ভাই’, ‘রায় দিয়েছে আদালত, বাধা দেয়ার তুই কে’, ‘অবিলম্বে শপথ চাই’সহ বিভিন্ন স্লোগানে মুখর করে তোলেন পুরো এলাকা।
এর আগে, বুধবার (১৪ মে) দুপুরে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন কর্মসূচি থেকে আজকের অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা দেয়া হয়। পূর্বঘোষণা অনুযায়ী বৃহস্পতিবার সকালে কর্মসূচি শুরু হলে সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংখ্যা বাড়তে থাকে। বেলা ১১টার পর তারা নগর ভবনের ভেতরে প্রবেশ করে নিচতলায় অবস্থান শুরু করেন।
অবস্থান কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারীরা বলেন, ‘আদালতের রায় এবং নির্বাচন কমিশনের গেজেট প্রকাশের পরও এখনও ইশরাক হোসেনকে শপথ করানো হয়নি—এটি আইন, গণতন্ত্র ও জনগণের প্রতি চরম অবমাননা।‘
তারা আরও বলেন, ‘আমরা এমন একজন মেয়র চাই, যিনি জনগণের কথা শোনেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকেন এবং একটি পরিচ্ছন্ন, মশামুক্ত ও বাসযোগ্য ঢাকা গড়তে কাজ করবেন। ইশরাক হোসেনই সেই মানুষ।‘
বিক্ষোভকারীরা হুঁশিয়ারি দিয়ে জানান, যতদিন পর্যন্ত ইশরাক হোসেনকে মেয়রের দায়িত্ব দেয়া না হবে, ততদিন তারা নগর ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন এবং প্রয়োজনে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করবেন।
অবস্থানে শুধু সাধারণ নগরবাসীই নয়, একাত্মতা প্রকাশ করেছেন ডিএসসিসির সাধারণ কর্মচারীরাও। সকাল থেকে তারা অফিসের কার্যক্রম বন্ধ রেখে নগর ভবনের সব গেট বন্ধ করে দেন এবং ভেতরে মঞ্চ বানিয়ে কর্মসূচিতে অংশ নেন। অবস্থান কর্মসূচিতে ঢাকার বিভিন্ন এলাকার ব্যবসায়ী, রাজনৈতিক কর্মী ও সচেতন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরাও যোগ দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, গত ২৭ মার্চ নির্বাচন ট্রাইব্যুনাল ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে ঘোষণা দেন। এরপর ঈদের পর ১৬ এপ্রিল পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করে ১০ দিনের মধ্যে গেজেট প্রকাশের নির্দেশ দেয়া হয় নির্বাচন কমিশনকে।
২২ এপ্রিল নির্বাচন কমিশন আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত চেয়ে চিঠি পাঠায়। শেষমেশ ২৭ এপ্রিল রাত ৯টায় মৌখিক অনুমতির ভিত্তিতে গেজেট প্রকাশ করে কমিশন এবং পরদিন তা স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। স্থানীয় সরকার বিভাগ গেজেটটি ফেরত পাঠিয়ে আপিলের নির্দেশ দেয়, যদিও ইসি জানিয়েছে তারা আপিল করবে না।
এরপর এক সপ্তাহ পার হলেও এখনও পর্যন্ত ইশরাক হোসেনের শপথ গ্রহণের কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি।