সারাদেশে ‘অগ্নিসন্ত্রাস ও নাশকতা’ ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ঘটাচ্ছে,গ্রেপ্তার অব্যাহত রাখতে আওয়ামী লীগ ও পুলিশ যানবাহনে আগুন দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) বিকালে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই অভিযোগ করেন।
রিজভী বলেন, ‘অগ্নি সন্ত্রাস ও নাশকতা নিখুঁতভাবে এই সরকার পরিচালিত করছে। জনগণের পক্ষ থেকে যে শান্তিপূর্ণ হরতাল–অবরোধের মতো আন্দোলন কর্মসূচিকে অপবাদ দেওয়ার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে লাগাতার যে প্রচারণা, মিডিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করে তারা অব্যাহত রেখেছে।‘
তিনি বলেন, আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কতিপয় চিহ্নিত দলদাস সদস্য এবং ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখা আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী কর্মীদের যে যৌথ ধ্বংসযজ্ঞ দেশজুড়ে পরিলক্ষিত হচ্ছে। নিজেরাই অগ্নিসন্ত্রাসের মাধ্যমে একটি পরিকল্পিত অরাজকতা সৃষ্টি করছে জনবিচ্ছিন্ন সরকার। উদ্দেশ্য হলো, বিদ্যমান পরিস্থিতির ফায়দা লুটে, বিএনপি তথা গণতন্ত্রের পক্ষে শক্তির উপর হামলা–মামলা ও গণগ্রেপ্তার অব্যাহত রাখা।
রিজভী বলেন, প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, অধিকাংশ ঘটনা আইন–শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপস্থিতিতে বা বড় পুলিশ চেকপোস্টের কাছাকাছি ঘটছে। যেমন, গত ৬ নভেম্বর চট্টগ্রামের চাতরী চৌমহনী বাজারের ট্রাফিক পুলিশ বক্সের ঠিক পাশে দাঁড়ানো একটি বাসে অজ্ঞাতনামা কয়েকজন তথা আওয়ামী লীগ অগ্নিসংযোগ করে। গত ৩১ অক্টোবর আশেপাশে ব্যাপক পুলিশ মোতায়েন থাকা সত্বেও, ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবের কাছে একটি বাসে আগুন দেওয়া হয়। ভাইরাল ছবিতে দেখা গেছে যে, ঢাকার বাংলামোটর মোড়ে পুলিশ বক্সের সামনে একটি গণপরিবহন জ্বলছে, যাকে ঘিরে অনেক পুলিশ দাঁড়িয়ে আছে।
তিনি বলেন, গত ৬ নভেম্বর ফেনীতে নুরুল উদ্দিন টিপু নামে স্থানীয় এক যুবলীগ নেতা চট্টগ্রামে চিনিকলের একটি ট্রাকে আগুন দেওয়ার ঘটনায় হাতেনাতে ধরা পড়ে। গত ১৪ নভেম্বর নাটোরে তাশরীক জামান রিফাত নামে একজন আওয়ামী লীগ কর্মীকে মশাল ও মুখোশসহ পুলিশ আটক করে, সেইসঙ্গে তার পরিত্যক্ত ঘর থেকে আরও ৬টি মশাল, ৩টি মুখোশ ও একটি মোটরসাইকেল জব্দ করে। পুলিশ প্রথমে তাকে বিএনপির সঙ্গে সম্পৃক্ততার সন্দেহে গ্রেপ্তার করলেও, পরে আওয়ামী লীগের কর্মী নিশ্চিত হয়ে সঙ্গে সঙ্গে ছেড়ে দেয়।
গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে ৪৭৫ জনের বেশি বিএনপি নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে, এবং বিভিন্ন মামলায় এক হাজার ৭২০ জনের বেশি নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে বলে দাবি করেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
রিজভী বলেন, আগামীকাল ভোর ৬টা থেকে যে অবরোধ শুরু হচ্ছে সেই কর্মসূচিতে জনগণ, দলের নেতাকর্মী, সমমনা জোট সমর্থন করবে। এ কর্মসূচি আমাদের দেশের গণতন্ত্র ও মানুষের মালিকানা ফিরিয়ে দেওয়ার বৃহত্তর আন্দোলনের অংশ।
মোরশেদ আলম/দীপ্ত নিউজ