দ্বিতীয় ইউনিট চালু দুদিনের মাথায় কারিগরি ত্রুটির কারণে বন্ধ রয়েছে বাগেরহাটের রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন। শুক্রবার (৩০ জুন) রাত ৯টা থেকে কেন্দ্রটির উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। তবে কর্তৃপক্ষ বলছে (ইন্সপেকশন ও মেইন্টেন্যান্স) কাজের জন্য উৎপাদন বন্ধ রাখা হয়েছে।
সোমবার (৩ জুলাই) বাংলাদেশ ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানির (বিআইএফপিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাঈদ একরামুল্লাহ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, কারিগরি ত্রুটি, ইন্সপেকশন ও মেইন্টেন্যান্সের কাজের জন্য ৩০ জুন রাত থেকে কেন্দ্রটির বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। আগামী ৫ অথবা ৬ জুলাই আবারও উৎপাদন শুরু করা যাবে। বর্তমানে কেন্দ্রটিতে কোনো কয়লা সংকট নেই। এছাড়া আগামী ৫ জুলাই বিদ্যুৎকেন্দ্রটির জন্য কয়লাবাহী একটি জাহাজ মোংলা বন্দরে ভিড়বে।
উল্লেখ্য, ২০১০ সালে ভারত ও বাংলাদেশ যৌথ উদ্যোগে তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। ২০১২ সালের ২৯ জানুয়ারি বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড এবং ভারতের এনটিপিসি লিমিটেডের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশ–ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি (প্রা.) লিমিটেড (বিআইএফপিসিএল) নামে কোম্পানি গঠিত হয়। এই কোম্পানির অধীনে ১৩২০ মেগাওয়াট মৈত্রী সুপার থার্মাল পাওয়ার প্রজেক্ট (রামপাল) নামে তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ শুরু হয়। বাগেরহাটের রমাপাল উপজেলার রাজনগর ও গৌরম্ভা ইউনিয়নের ১ হাজার ৩৪ একর জমি অধিগ্রহণ শেষে ১৬ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে রামপাল তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ শুরু হয়। ২০১৩ সালের ৫ অক্টোবর কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা থেকে রামপাল তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপরই শুরু হয় জমি ভরাট ও সড়ক নির্মাণের কাজ। প্রায় ৯ বছর মহা কর্মযজ্ঞ শেষে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদনে যায় কেন্দ্রটি।
এর আগে গত বছরের ১১ জুলাই বয়লার স্টিম ব্লোয়িং স্থাপন করা হয়। এক মাস পরে ১৪ আগস্ট টারবাইন এ স্টিম ডাম্পিং এবং একদিন পরে ১৫ আগস্ট জাতীয় গ্রিডের সঙ্গে পরীক্ষামূলক বিদ্যুৎ সরবরাহ (ট্রান্সমিশন) শুরু করা হয়। পরে ১৭ ডিসেম্বর থেকে জাতীয় গ্রিডে বাণিজ্যিকভাবে যুক্ত হয় কেন্দ্রটির বিদ্যুৎ। এরপরে কয়লা সংকট ও কারিগরি ত্রুটির কারণে কয়েকবার উৎপাদন বন্ধ হয় কেন্দ্রটির।
মামুন আহমেদ/মাসউদ/দীপ্ত সংবাদ