শনিবার, নভেম্বর ২৩, ২০২৪
শনিবার, নভেম্বর ২৩, ২০২৪

অন্তর্বর্তী সরকারে যোগ হতে পারে নতুন উপদেষ্টা

Avatar photoদীপ্ত নিউজ ডেস্ক

প্রশাসনিক কার্যক্রমে গতি আনতে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন উপদেষ্টা পরিষদে চলতি মাসেই কিছু নতুন মুখ যোগ হতে পারে বলে সচিবালয় সূত্রে জানা গেছে।

এছাড়া মন্ত্রণালয় ও বিভাগ বিতরণে রদবদল হতে পারে বলেও সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তারা জানান, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগে কাজ করার পূর্ব অভিজ্ঞতা আছে এমন তিনচারজন নতুন মুখ যুক্ত করার বিষয়ে আলোচনা চলছে।

বর্তমানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টারা দুই বা ততোধিক মন্ত্রণালয় পরিচালনা করছেন। এর ফলে প্রশাসনিক কার্যক্রমে ধীর গতি লক্ষ করা যাচ্ছে।

যেসব উপদেষ্টা গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়সহ একাধিক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করছেন, তাদের কাজের চাপ কমাতে নতুন উপদেষ্টা যুক্ত করা হবে বলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এ তথ্য জানা যায়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, কত দিনের মধ্যে উপদেষ্টা পরিষদ সম্প্রসারণ হবে, তার সঠিক তারিখ জানা যায়নি। তবে চলতি মাসের মধ্যেই নতুন উপদেষ্টা নিয়োগ দেওয়া হতে পারে।

নতুন উপদেষ্টাদের কত সংখ্যা হবে সে বিষয়ে নির্দিষ্ট সংখ্যা জানাতে পারেননি তিনি। তবে ৩৪ জন হতে পারে বলে ধারণা দেন এই কর্মকর্তা। তিনি বলেন, এই বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে।

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নিয়োগ পাওয়া সচিব, দপ্তর প্রধান ও প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নানা ধরনের অসহযোগিতার অভিযোগ উঠেছে। ফলে কাজের গতি অনেকটা কম লক্ষ করা গেছে।

নতুন উপদেষ্টা নিয়োগের পর প্রতিটি মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরে প্রশাসনিক কাজ ও নজরদারিতে গতি আসবে বলে আশা প্রকাশ করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে প্রশাসনে স্থবিরতা বিষয়ে চলতি সপ্তাহে জানতে চাইলে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া জানান, ১৬১৭ বছরের বিষয়ের সমস্যা অল্প সময়ে সমাধান করা সম্ভব নয়। একটু সময় লাগবে।

এছাড়া গত মাসের ১২ সেপ্টেম্বর সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রশাসনে স্থবিরতার কথা স্বীকার করে তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘প্রশাসনে স্থবিরতা তো আছে। এটা আমরা লক্ষ করছি। আমরা বিভিন্ন জায়গা থেকে অসহযোগিতা পাচ্ছি। আশা করি, দ্রুত সময়ের মধ্যে স্থবিরতা কেটে যাবে।’

ছাত্রজনতার আন্দোলনে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা করে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। শুরুতে প্রধান উপদেষ্টাসহ এই সরকারের সদস্যসংখ্যা ছিল ১৭। এরপর এক সপ্তাহের ব্যবধানে গত ১৬ আগস্ট আরও চারজন উপদেষ্টা যুক্ত করা হয়।

বর্তমানে অন্তবর্তী সরকারের তিনজন উপদেষ্টা তিনটি করে মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করছেন। ১০ জন উপদেষ্টা দায়িত্ব পালন করছেন দুটি করে মন্ত্রণালয়ের। মন্ত্রণালয় ও দপ্তরগুলো দ্রুত সচল ও গতিশীল করতে গত ১২ আগস্ট নিজের হাতে থাকা ২৫টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগে কর্মরত ২৮ জন সচিবকে নির্দেশ দেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এরপরও দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি হয়নি। পরে ১৬ আগস্ট আরও চারজন উপদেষ্টা নিয়োগ দেওয়া হয়। গত ৪ সেপ্টেম্বর সব মন্ত্রণালয়বিভাগের সচিবদের নিয়ে বৈঠক করে কাজের গতি বাড়াতে আবার নির্দেশনা দেন প্রধান উপদেষ্টা। এরপরও উপদেষ্টাদের উদ্যোগ ছাড়া সহজে কোনো কাজ হচ্ছে না।

আলোচনায় যেসব মন্ত্রণালয়

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, সড়ক পরিববহন ও সেতু মন্ত্রণালয়, রেলপথ মন্ত্রণালয়, শিক্ষা অথবা পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়, কৃষি মন্ত্রণালয়, খাদ্য মন্ত্রণালয় এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ে নতুন উপেদেষ্টা আসতে পারে বলে আলোচনা রয়েছে।

সরকারের মন্ত্রণালয় ও বিভাগ রয়েছে ৫৮টি। এসব মন্ত্রণালয় ও বিভাগে সর্বশেষ দ্বাদশ সংসদের মন্ত্রিসভায় মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী ছিলেন ৪৫ জন। একাদশ সংসদের মন্ত্রিসভায় মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রী ছিলেন ৪৭ জন। ড. ফখরুদ্দীন আহমদ সরকারের আমলে উপদেষ্টার সংখ্যা ছিল ১৬।

প্রধান উপদেষ্টার অধীনে যেসব মন্ত্রণালয়

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের অধীনে আছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ, খাদ্য মন্ত্রণালয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়।

উপদেষ্টাদের মধ্যে কে কোন কোন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে

বর্তমানে অন্তবর্তী সরকারে উপদেষ্টা আছেন ২১ জন। তারমধ্যে তিনটি করে মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করছেন তিনজন। অর্থ, বাণিজ্য এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা হিসেবে সালেহউদ্দিন আহমেদ, আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে আসিফ নজরুল, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়; সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ে মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।

দুটি করে মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব আছেন যারাস্বরাষ্ট্র ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে আছেন লে. জে. (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং ভূমি মন্ত্রণালয়ে হাসান আরিফ, শিল্প মন্ত্রণালয় এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের আদিলুর রহমান খান।

প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে যুক্ত আছেন আলী ইমাম মজুমদার। এছাড়া পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নাহিদ ইসলাম, যুব ও ক্রীড়া এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে আসিফ মাহমুদ, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের ফারুকআজম, বস্ত্র ও পাট এবং নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন, মহিলা ও শিশুবিষয়ক এবং সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে শারমিন এস মুরশিদ দায়িত্ব পালন করছেন।

মো. তৌহিদ হোসেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের, নূর জাহান বেগম স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের, বিধান রঞ্জন রায় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের, ফরিদা আখতার মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে, আ ফ ম খালিদ হাসান ধর্ম মন্ত্রণালয়ের ও সুপ্রদীপ চাকমা পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

আরও পড়ুন

সম্পাদক: এস এম আকাশ

অনুসরণ করুন

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন

স্বত্ব © ২০২৩ কাজী মিডিয়া লিমিটেড

Designed and Developed by Nusratech Pte Ltd.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More